শেখ ডোনা: হাঁটার স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে অনেক। প্রতিদিনের স্বাভাবিক নিয়মে আমরা সাধারণত ভোরে বা ঘুম থেকেই উঠেই হাঁটি বা ব্যায়াম করে নেই। কিন্তু আপনি জানেন কী, সন্ধ্যার প্রথম দিকে বা বিকেলের দিকে হাঁটলে, তা স্বাস্থ্যের জন্য আরো বেশি উপকারী। ভালো স্বাস্থ্যের প্রয়োজনে আপনার রুটিনে প্রতিদিন সন্ধ্যায় হাঁটার অভ্যাস করুন। জেনে নিন এর ফলাফল।
ভালো ঘুম
আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন রাতে যাদের ঘুম ভালো হয় না। কেউ কেউ আবার অনিদ্রাজনিত রোগে ভুগছেন। এমনটা হলে তারা সন্ধ্যার শুরু বা বিকেলের দিকে হাঁটুন। বিকেলে বা সন্ধ্যার আগে শরীরে মেলাটোনিন তৈরি হয়। মেলাটোনিন শরীরে সবসময় উৎপন্ন হলেও আলোর উপস্থিতিতে এটি নষ্ট হয়ে যায়। মেলাটোনিন শরীরে ঘুমের সাইকেলকে নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে এটি মস্তিষ্কে ঘুমের সংকেত দেয় এবং ঘুম ভালো হয়। তাছাড়া সন্ধ্যা বা বিকেলের দিকে হাঁটাহাঁটি করলে শরীরের স্বাভাবিক কার্ডিয়ান শক্তিশালী হয়।
মানসিক চাপ কমে
মানসিক চাপ কি আপনাকে কুরে কুরে খাচ্ছে? মানসিক চাপ কমানোর জন্য একটি দুর্দান্ত উপায় রয়েছে। আর তা হলো নিয়মিত হাঁটা। বিকেলে বা সন্ধ্যার দিকে হাঁটলে তা আরো কার্যকর হয়। অধিকাংশ সময় কাজের চাপে আমরা অনেকে হাঁটার সময় পাই না। কর্মক্ষেত্রেও যতই কাজের চাপ থাকুক না কেন, কাজের ফাঁকে পাঁচ বা দশ মিনিটের জন্য একটু হেঁটে নিন। যা কাজের চাপকে পিছনে ফেলে আপনার মনে আনবে এক ধরণের রিফ্রেশমেন্ট।
মন ভালো থাকে
নিয়মিত হাঁটলে হতাশা কমে। কমে উদ্বেগ। সন্ধ্যার নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং তাজা বাতাস আপনার মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
বিভিন্ন ব্যায়ামের মধ্যে হাঁটা এমন একটি ব্যায়াম যা হৃদপিণ্ডের সুস্থতা নিশ্চিত করে। সন্ধ্যা বা বিকেলের দিকে হাঁটলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। পাশাপাশি কার্ডিওভাসকুলারের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। রক্তচাপ কমায় এবং হৃদপিণ্ডকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
শরীরে শক্তি উৎপাদন করে
অধিকাংশ মানুষ ধারণা করে, শরীর দুর্বল থাকলে হয়তো হাঁটাহাঁটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আসলে তা নয়। বরং ব্যায়াম করলে শরীরে শক্তির মাত্রা বাড়তে পারে। ব্যায়াম করলে পরবর্তী কাজের জন্য যথেষ্ট মনোযোগ বাড়ে। এক্ষেত্রে সন্ধ্যায় হাঁটলে শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অতিরিক্ত ওজন হ্রাস করে
শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন? এমনটা হলে নিয়মিত সন্ধ্যায় হাঁটুন। এতে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি পুড়ে বিপাক প্রক্রিয়ার উন্নীত করে ওজন কমাতে সাহায্য করে। ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। হজম শক্তির উন্নতি করে শরীরে দক্ষতার সঙ্গে পুষ্টি শোষণ করতে সাহায্য করে।
সন্ধ্যায় হাঁটলে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। শরীরে ইন্দ্রিয়গুলো উদ্দীপিত হয়। ফলে কাজের সৃজনশীলতা বাড়ে। আপনি চাইলে রাতে খাবারের পরও হাঁটতে পারেন। এতে আপনার শরীর এবং মন দু’টোই ভালো থাকবে।