প্রাচীনকালে অন্দরমহলের গোপনীয়তা রক্ষার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো পর্দা। তবে বর্তমানে একটি বাসার অভ্যন্তরীণ লুকটাই যেন বদলে দেয় পর্দা। আকর্ষণীয় করে ঘরকে। বাজারে এখন বিভিন্ন থিম ও রঙের বাহারি পর্দা পাওয়া যায়, যা ঘরের নান্দনিকতা আরও বাড়িয়ে তোলে।
সঠিক পর্দা বাছাই করবেন যেভাবে
ফ্যাব্রিক নির্বাচন
পর্দা বাছাইয়ের সময় এর ফ্যাব্রিক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘরের রঙ, আকৃতি ও আলো প্রবেশের পরিমাণ বুঝে উপযুক্ত ফ্যাব্রিক নির্বাচন করা উচিত। বাজারে সুতি, লিনেন, ভয়েল, সিল্ক, ভেলভেট, নেট, টিস্যু, খাদি ইত্যাদি বিভিন্ন ফ্যাব্রিকের পর্দা পাওয়া যায়।
আলো প্রবেশের জন্য হালকা ফ্যাব্রিক যেমন সুতি, লিনেন বা ভয়েল ভালো হবে। গর্জিয়াস ও ডার্ক ভাইব পেতে ভারী ফ্যাব্রিক যেমন ভেলভেট বা হেভি সিল্ক নির্বাচন করুন। ফ্লোর-টাচ জানালার জন্য কুচিওয়ালা পর্দা মানানসই।
রুমের সাইজ ও রঙ অনুযায়ী পর্দা নির্বাচন
হালকা রঙের দেওয়ালে গাঢ় রঙের পর্দা এবং গাঢ় রঙের দেওয়ালে হালকা রঙের পর্দা মানানসই। ছোট ঘরের জন্য হালকা রঙের ও লম্বা ডিজাইনের পর্দা ব্যবহার করুন, যা ঘরকে বড় দেখাবে। বড় প্রিন্টের পরিবর্তে লম্বালম্বি স্ট্রাইপ বা সলিড কালারের পর্দা ব্যবহার করলে ঘর ক্লাসি দেখাবে।
বেডরুমের জন্য পর্দা বাছাই
হালকা ও স্নিগ্ধ রঙ যেমন বেবি ব্লু, প্যাস্টেল গ্রিন, অফ হোয়াইট, লাইট পীচ ইত্যাদি বেছে নিন। বাচ্চাদের রুমের জন্য উজ্জ্বল রঙ যেমন পিংক, ল্যাভেন্ডার, ইয়োলো ভালো হবে। ইন্টেরিয়র ডিজাইন থাকলে সলিড কালারের পর্দা মানানসই হবে। ফ্লোরাল বা জ্যামিতিক প্যাটার্নের পর্দাও বেডরুমের জন্য জনপ্রিয়। ট্রান্সপারেন্ট বা নেটের পর্দা এড়িয়ে চলুন এবং দেয়াল ও আসবাবের বিপরীত রঙের পর্দা নির্বাচন করুন।
ড্রয়িং ও ডাইনিং রুমের জন্য পর্দা
গর্জিয়াস ডিজাইনের, নেটের ওপর কাজ করা বা ডাবল লেয়ারের পর্দা বেছে নেওয়া যায়। যদি ড্রয়িং ও ডাইনিং রুম আলাদা না হয়, তাহলে মাঝখানে স্বচ্ছ নেটের পর্দা ব্যবহার করে আলাদা লুক তৈরি করা যায়। কুশন, সোফা ও আসবাবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পর্দার রঙ ও ডিজাইন বেছে নেওয়া উচিত।
কাস্টমাইজড বাহারি পর্দা
বর্তমানে নিজের পছন্দ অনুযায়ী কাস্টমাইজড পর্দার জনপ্রিয়তা বাড়ছে। যেমন- দুই পাশে প্রিন্টেড পর্দা ও মাঝখানে একরঙা পর্দা।শেডেড বা ওমব্রে স্টাইলের পর্দা। বোহো স্টাইল বা কুশিকাটার কাজ করা পর্দা।
ভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন পর্দা
বছরের সবসময় এক ধরনের পর্দা না রেখে শীত ও গ্রীষ্মের জন্য আলাদা আলাদা সেট রাখা যেতে পারে। শীতের জন্য গাঢ় ও ভারী পর্দা।গ্রীষ্মের জন্য হালকা ও ঠান্ডা রঙের পর্দা। উৎসব ও বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য আলাদা ডিজাইনার পর্দা।
পর্দা মেইনটেইন করবেন যেভাবে
সাধারণত ছয় মাস অন্তর পর্দা পরিষ্কার করা উচিত। যারা ধুলোর প্রতি সংবেদনশীল, তারা ১-২ মাস অন্তর পরিষ্কার করুন। সুতি বা সিনথেটিক পর্দা সহজেই ওয়াশিং মেশিনে ধোয়া যায়। ভারী ও কারুকাজ করা পর্দার জন্য প্রফেশনাল ক্লিনিং করা ভালো। পর্দা পরিষ্কারের সময় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করা উচিত।
সারা দিনের ক্লান্তির পর শান্তির নীড় হিসেবে ঘরকে আরামদায়ক করে তুলতে সঠিক পর্দা বাছাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায় না, বরং আপনার ব্যক্তিত্ব ও রুচির প্রতিফলন ঘটায়। সঠিক পর্দা নির্বাচন করে ঘরকে করে তুলুন আরও আকর্ষণীয় ও নান্দনিক।