দুই বছর আগে চলচ্চিত্র সমিতির নির্বাচন ঘিরে চরম বিরোধ চলছিল সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের মধ্যে। এ সময় তারা একে-অপরকে ঘায়েল করে বক্তব্য দেন। তবে শনিবার (২ মার্চ) শিল্পী সমিতির বার্ষিক বনভোজনে বিস্ফোরক এক সিদ্ধান্তের কথা জানান নিপুণ। তিনি বলেছেন, সমিতি থেকে জায়েদ খানের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। তিনি সমিতির নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না।
সিদ্ধান্তটি সবাইকে অবাক করেছে বটে। নিপুণের ঘোষণাপত্রে জানানো হয়, জায়েদ খান ব্যক্তিগত আক্রোশে ধারাবাহিকভাবে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিসহ সাধারণ সম্পাদকের নামে মিথ্যা, মনগড়া, কুরুচিপূর্ণ কল্পকাহিনী সাংবাদিক সম্মেলন, ইউটিউব, ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করছেন। গত বছরের ২ এপ্রিলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তার সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।
শিল্পী সমিতির সিদ্ধান্তের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু। তিনি শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন। খসরু বলেন, বনভোজনের শুরুতে শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদনে ৯ নম্বর একটি বার্তায় জায়েদ খানের সদস্যপদ খারিজের ঘোষণা দেওয়া হয়।
চলতি বছর চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে দুটি প্যানেল থাকবে। একটি হলো- মিশা-ডিপজল প্যানেল এবং অন্যটি অমিত হাসান-নিপুণ প্যানেল। আগামী ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে এই নির্বাচন। এর মধ্যে শিল্পী সমিতির নির্বাচনী প্যানেল নিয়ে ঢালিউডে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। মিলছে দল-বদলের খবর। নাম আসছে জায়েদ খানেরও। এমন পরিস্থিতিতে সাংগঠনিক নেতা হিসেবে পরিচিত জায়েদ খানের বিপক্ষে সাংগঠনিক এই সিদ্ধান্তটি বিস্ময়কর না হলেও বিব্রতকর বলে মনে করছেন অনেকে।
শিল্পী সমিতি থেকে নিজের সদস্যপদ বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জায়েদ খান। নিপুণকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত কেন এসেছে সেটা একটি শিশুও বলতে পারবে। একজন অবৈধ দখলদার যা চাইবে তাই করতে পারে। কারণ, তার তো ভোটারদের কাছে জবাবদিহি নেই। ভোটে তো আমিই জয়লাভ করেছিলাম। অথচ দখল করলো আরেকজন।
জায়েদ খান বলেছেন, স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমি তিনবারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এই সমিতির। এটা আমার প্রাণের সংগঠন। এই সংগঠন ও সংবিধানের প্রতিটি লাইন আমার মুখস্ত। আমি একজন সাংগঠনিক ছেলে। আমি জানি, কোনটা সংগঠনবিরোধী আর কোনটা ব্যক্তিবিরোধী। শুরু থেকেই আমার অভিযোগ একজন ব্যক্তি ও তার অবৈধ কার্যক্রম নিয়ে। কোনো ব্যক্তি যদি অপরাধ করে তার বিরুদ্ধে কী কেউ কথা বলতে পারবে না? ব্যক্তির দায় তো সংগঠনের নয়। আমি তো সংগঠনের বিরুদ্ধে কখনও কিছু বলিনি। তাহলে কেন সংগঠনবিরোধী বক্তব্যের দায় তুলে আমার সদস্যপদ বাতিল ঘোষণা করলো?
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সমিতিতে কারো সদস্যপদ বাতিল করলে ওই সদস্যকে অন্তত তিনবার নোটিশ দিতে হয়। জায়েদ খান জানান, তাকে একবার চিঠি দেওয়া হয়েছে, এর জবাবও তিনি দিয়েছেন। আর কোনো চিঠি তিনি পাননি। এই নায়কের দাবি, বর্তমান কমিটির লোকেরা সংগঠনের সংবিধানই পড়েনি। ফলে তারা সংগঠনের বিধি-বিধান জানে না।