ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

জামায়াতের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে ইমরানের পিটিআই

আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৪:০৩ পিএম

সময়ে সময়ে রং বদলাচ্ছে পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক সংকট। ভোট অনুষ্ঠিত হলেও প্রয়োজনীয় ১৩৩টি আসন না পাওয়ায় এককভাবে সরকার গঠন করতে পারছে না কোনো দল। ফলে জোট সরকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। এখন পর্যন্ত যতটা জানা গেছে তা হলো, নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন এবং আসিফ আলী জারদারি ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি সরকার গঠনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাহলে ইমরান খানের পিটিআই কী করবে?

দল হিসেবে নির্বাচন না করলেও পিটিআইয়ের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চমক দেখিয়েছেন। সর্বোচ্চ ১০১টি আসন পেয়েছেন তারা। তাদের দাবি, প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভী পিটিআইকেই সরকার গঠন করার আহ্বান জানাবেন। যদিও তাদেরও প্রয়োজনীয় ১৩৩ আসন নেই। স্বতন্ত্র নেতাদের কোনো দলের সঙ্গে জোট গঠন করতেই হবে। 

দলীয় ব্যানারে নির্বাচন না করায় পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে সংরক্ষিত আসন লাভের ক্ষেত্রেও বিপদে পড়তে পারে পিটিআই। এই বিষয়টি এড়াতেই অন্য দলকে সমর্থন বা সাময়িকভাবে অন্য কোনো দলের সঙ্গে একীভূত হয়ে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। পিটিআইয়ের বর্তমান প্রধান ব্যারিস্টার গহার আলী খান পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি জানিয়েছে।

পিটিআই প্রধান গহার জানিয়েছেন, তার দল সম্ভাব্য সবগুলো উপায় বা সুযোগ খতিয়ে দেখছে। তবে পিটিআই নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন বা বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপির সঙ্গে জোট বাঁধবে না। পিটিআই দল দুটির সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না। তাদের সঙ্গে সরকার গঠনের জন্য কোনো আলোচনা হবে না। পিএমএল-এন বা পিপিপির সঙ্গে সরকার গঠন করার চেয়ে বিরোধী দলে বসা ভালো। কিন্তু পিটিআই মনে করে সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে।

গহার আলী খান এ সময় জোর দিয়ে বলেন, জাতীয় পরিষদে যদি তাদের দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা গ্রহণ না করা হয় তবে পিটিআই একটি শক্তিশালী বিরোধী দল গঠন করবে। তবে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে পিটিআই দলীয় ব্যানারে নির্বাচন করতে না পারায় সংখ্যানুপাতে সংরক্ষিত আসন পাওয়ার ক্ষেত্রে বিপদ হতে পারে। আর এই আসনগুলো না পেলে পিটিআইয়ের জন্য সরকার গঠন করা আরও কঠিন হয়ে যাবে। 

এ ক্ষেত্রে পিটিআই অন্য কোনো দলকে সমর্থন দিয়ে অথবা দলটির নির্বাচিত এমএনএ-রা অন্য কোনো দলে যোগ দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের চেষ্টা চালাতে পারে। এ ক্ষেত্রে পিটিআইয়ের জন্য একটি দারুণ বিকল্প হতে পারে পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামী। খাইবার পাখতুনখাওয়ার প্রাদেশিক পরিষদে দলটির তিন জন সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এই দুটি দলের আগেও জোট বেঁধে কাজ করার ইতিহাস আছে। 

পিটিআইয়ের জন্য অপর বিকল্প হতে পারে মজলিশ-ই-ওয়াহাদাতুল মুসলেমিন। এক সময় এই দলটি পিটিআইয়ের সঙ্গে জোট বেঁধে রাজনীতি করেছে। পরে অবশ্য ইমরান খানের সঙ্গ ছেড়ে দেয় দলটি।

সব মিলিয়ে আপাতত মনে হচ্ছে, পিটিআইয়ের জন্য অন্য দলকে সমর্থন দেওয়া কিংবা অন্য কোনো দলের ব্যানারে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করাই সহজ পথ। এ ক্ষেত্রে অবশ্য বেশ কিছু বিড়ম্বনা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে অন্য দলের সঙ্গে মিশে গেলে পিটিআইয়ের ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে। 

এ ছাড়া সরকার গঠন সম্ভব হলে, প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, ইমরান খানের মামলার কী হবে এবং সবচেয়ে বড় কথা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে সে বিষয়টি নিয়ে ভাবনার অবকাশ আছে। তবে গহার আলী খান এরই মধ্যে বলেছেন, তারা সরকার গঠন করলে সব রাজবন্দীর মুক্তির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে।

WA/NC
আরও পড়ুন