গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে টেস্টের শেষ দিনটা যেন ভারতীয় ক্রিকেটের কাছে দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠল। মাত্র ২৭ রানে দুই উইকেট হারিয়ে যে অনিশ্চয়তা নিয়ে ভারত চতুর্থ দিন শেষ করেছিল, তা আর কাটানোর সুযোগ হয়নি। সাইমন হারমার ও কেশব মহারাজের নিখুঁত স্পিন আক্রমণে সকাল থেকেই ডুবতে থাকে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস। শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৪০ রানে অলআউট হয়ে ৪০৮ রানের লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করতে হয় দলটিকে। টেস্ট ইতিহাসে রানের হিসেবে এটিই ভারতের সবচেয়ে বড় হার।
শেষ মুহূর্তটি ছিল নাটকীয়। কেশব মহারাজের বলটিকে বাউন্ডারিতে তুলতে গিয়ে উইকেট হারান মোহাম্মদ সিরাজ। মিড অন থেকে দৌড়ে এসে মার্কো জানসেন যে ক্যাচটি নিলেন, তা মুহূর্তেই মাঠে উপস্থিত সবাইকে অবিশ্বাসে স্তব্ধ করে দেয়। টেম্বা বাভুমাও বিস্ময় সামলাতে পারেননি। সেই ক্যাচে শুধু সিরাজ নয়, ভারতের পুরো লড়াইই ধসে পড়ে।
এই জয়ের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় এবং ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয়ের ২৫ বছরের প্রতীক্ষা ঘুচিয়ে ফেলে। ২০০০ সালে হ্যান্সি ক্রনিয়ের অধীনে পাওয়া শেষ সাফল্যের পর এবারই তারা আবার ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করল।
৫৪৯ রানের হিমালয়সম লক্ষ্য টপকানো অসম্ভব জানলেও ম্যাচটিকে ড্র-এ নেওয়ার সুযোগ ছিল ভারতের কাছে। কিন্তু ব্যাটসম্যানেরা টিকে থাকতে ব্যর্থ হন। হারমার একাই এ ইনিংসে ছয় উইকেট তুলে নেন-২৩ ওভারে মাত্র ৩৭ রান খরচে। দুই ইনিংস মিলিয়ে তার শিকার ৯ জন। মহারাজও শেষের দিকে এসে ভয়ংকর হয়ে ওঠেন, তুলে নেন জাদেজা ও সিরাজের উইকেট।
এর আগে সামান্য প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন সাই সুদর্শন ও রবীন্দ্র জাদেজা। সুদর্শন ১৩৯ বল খেলে ১৪ রান করলেও তার উদ্দেশ্য ছিল সময় ক্ষয় করা। জাদেজা লড়াইটা আরও এগিয়ে নেন, করেন ৫৪। কিন্তু এডেন মারক্রাম যখন ওয়াশিংটন সুন্দরকে ক্যাচ ধরে এক টেস্টে সর্বোচ্চ ৯ ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড গড়ে ফেললেন, তখনই ভারতের আশা প্রায় নিভে যায়। সেই রেকর্ড ক্যাচটিই হয়ে ওঠে ম্যাচের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত।