সুদানের উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর হামলার পর পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এতে শহরটি থেকে ৩ হাজার ২৪০টি পরিবার পশ্চিমাঞ্চলের টাওইলা শহরে পালিয়ে গেছে। পালানোর সময় ১৫০ জনেরও বেশি নারী ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে শনিবার (৮ নভেম্বর) এক স্থানীয় সমন্বয় সংস্থা জানিয়েছে।
দারফুরের জেনারেল কোঅর্ডিনেশন ফর ডিসপ্লেসড পার্সনস অ্যান্ড রিফিউজিস-এর মুখপাত্র অ্যাডাম রিগাল জানান, আরএসএফ জঙ্গিরা পালিয়ে যাওয়া বেসামরিক নাগরিকদের ধাওয়া করে এবং কার্নি এলাকায় অনেককে আটক করে। সেখানে হাজারো মানুষ আটকা পড়েছে, যাদের মধ্যে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন অসংখ্য শিশু রয়েছে।
তিনি আরও জানান, বন্দুকযুদ্ধে ১,৩০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। পাশাপাশি ১,২১০ জনের বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে এবং ৭০০ জন বয়স্ক ব্যক্তি গুরুতর অসুস্থ।
এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, বাস্তুচ্যুত এই পরিবারগুলোর প্রায় ১৬ হাজার ২০০ মানুষের খাদ্য, ওষুধ, বিশুদ্ধ পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, আশ্রয়সামগ্রী ও মানসিক সহায়তা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, মৌলিক চাহিদার ঘাটতির কারণে বেসামরিকদের অবস্থা দিন দিন আরও নাজুক হয়ে পড়ছে।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সূত্র জানায়, গত ২৬ অক্টোবর আরএসএফ এল-ফাশর দখল করার পর সেখানে বেসামরিকদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়।
আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) জানিয়েছে, এল-ফাশর থেকে বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে অপুষ্টির হার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, ২৬ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৮১ হাজারের বেশি মানুষ এল-ফাশর ও আশপাশের এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে।
২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে। এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে হাজারো মানুষ নিহত ও লাখো বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খবর আনাদোলুর।