ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বাড়তি ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে বিএবিবিএমএ'র সংবাদ সম্মেলন 

আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১২ পিএম

নিত্যপ্রয়োজনীয় বিস্কুট ও ব্রেডের ওপর আরোপিত বাড়তি মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএবিবিএমএ)। 

শনিবার (২৩ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি'র (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে সংগঠনটির সভাপতি সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। 

তিনি বলেন, প্রতিবাদ-সমালোচনা উপেক্ষা করে শ্রমজীবী, ছাত্র ও সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের খাবার রুটি-বিস্কুটে বাড়তি ভ্যাট চাপিয়ে সরকার প্রমাণ করছে তারা পূর্ববর্তী সরকারের চেয়েও বৈষম্যমূলক ও পশ্চাদপদ করনীতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। যা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনার সরাসরি পরিপন্থি। কোনো ধরনের বিবেচনা ছাড়াই সরকার রুটি ও বিস্কুট কোম্পানিকে গরিবকে শোষণের হাতিয়ার বানিয়েছে। এটা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু ও লজ্জাজনক।

শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট, গবেষণা প্রতিবেদন, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও অর্থনীতিবিদদের সমালোচনা উপেক্ষা করে সরকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের খাবার রুটি-বিস্কুটের ওপর বাড়তি ভ্যাট বহাল রেখেছে। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। উৎপাদন খরচ বাড়ায় রুটি-বিস্কুটের প্যাকেট এখন অনেক ছোট। কিন্তু আর কত ছোট হবে প্যাকেট? একসময় দেখা যাবে প্যাকেট আছে কিন্তু ভেতরে বিস্কুট নেই।

তিনি বলেন, রুটি-বিস্কুটের ওপর পূর্ববর্তী সরকারের সময় আরোপ করা ৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়িয়ে অন্তবর্তীকালীন সরকার ৭.৫ শতাংশ করেছে। কিন্তু আমরা প্যাকেট ছোট করিনি। দামও বাড়াইনি। আমরা আশা করেছিলাম সরকারের শুভবুদ্ধি ঘটবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার করবে। সহজে আদায়যোগ্য হওয়ায় কোনো বিবেচনা ছাড়াই সাধারণ মানুষের এই খাবারে ভ্যাট বহাল রাখা হয়েছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও দৃষ্টিকটু। বাড়তি ভ্যাট বহাল রাখায় আমাদের এখন সমন্বয় করতে হবে-দাম বাড়াতে হবে অথবা প্যাকেট আরও ছোট করতে হবে। অথচ প্যাকেট ছোট করার আর জায়গা নেই। এ দায়ভার কার? এই লজ্জা কার?

বিএবিবিএমএ'র সভাপতি বলেন, একদিকে সুপারশপ থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে, অথচ গরিবের নিত্যখাদ্যে ভ্যাট বহাল রাখা হয়েছে। ধনীদের জন্য ছাড়, আর গরিবের খাবারে কর কেন? এটা কেবল বৈষম্যমূলক নয়, বরং অনৈতিক এবং জাতিকে অপমান করার শামিল।

অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন মামুন বলেন, গবেষণা প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে-শ্রমজীবী মানুষ ও ছাত্র-ছাত্রী প্রতিদিন রুটি ও বিস্কুট খেয়ে তাদের ক্ষুধা নিবারণ করে। আবার বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট বলছে-খাদ্য নিরাপত্তার দিক থেকে বাংলাদেশ 'রেড জোনে'।  

তিনি বলেন, 'আমরা বহুবার বলেছি-যদি রাজস্ব সংগ্রহ করতে চান, তাহলে আমাদের শিল্পের চেয়ারম্যান ও ধনী ব্যবসায়ীদের ওপর ট্যাক্স আরোপ করুন। কিন্তু ভ্যাট কেন? সরকার আসলে বিস্কুট-রুটি কোম্পানিকে ব্যবহার করছে গরিব শোষণের হাতিয়ার হিসেবে। আমরা এই ভূমিকা পালন করতে চাই না।' 

শাখাওয়াত হোসেন মামুন বলেন, এ ভ্যাট পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা কোনো ভ্যাট চাই না-এটি শূন্য করতে হবে। সরকার যদি তা না করে তবে আমাদের দাম বাড়াতে হবে বা প্যাকেট ছোট থেকে আরো ছোট করতে হবে। আমাদের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে, ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আর সবচেয়ে বড় কথা সরকার নিজেই গুরুতর ভাবমূর্তির সংকটে পড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দ্রজিৎ সরকার, কিষওয়ান ফুড ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আবদুর রহমান প্রমুখ। 

LH/FJ
আরও পড়ুন