ঢাকা
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

টাঙ্গাইলের মধুপুরে জমি নিয়ে বিরোধ

মা-ছেলে ও বউসহ চারজনকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৪২ এএম

টাঙ্গাইলের মধুপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বৃদ্ধ মা, দুই ছেলে ও এক ছেলের স্ত্রীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। ৯৯৯-এ কল করে নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা মুক্ত হওয়ার পর একজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বউ-শাশুড়ি ১০০ শয্যার মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে মধুপুর পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুণ্ডুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরা হলেন- ওই গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী শাফিয়া বেগম (৫৫), বড় ছেলে আলমগীর হোসেন, ছোট ছেলে জুব্বার আলী ও আলমগীরের স্ত্রী জ্যোৎস্না বেগম। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আলমগীরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও শাশুড়ি শাফিয়া এবং ছেলের বউ জ্যোৎস্নাকে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। জুব্বার প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, আলমগীর হোসেন ও জুব্বারের প্রতিবেশী মৃত আবু শেখের ছেলে কালু মিয়া শেখ ও তার ভাইদের সঙ্গে ১.১৯ একর জমি নিয়ে বিরোধ বহুদিন ধরে। দুই পক্ষের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমা চলে আসছে। গত ২৩ বছর বাটোয়ারা মামলা চলার পর চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি আলমগীর ও জুব্বাররা রায় পেয়ে জমিতে নাম খারিজ করেন। প্রতিপক্ষ কালু মিয়া শেখ ও তার ভাইরা এ নিয়ে কয়েক মাস আগে ওই জমির মালিকানা দাবি করে আদালতে ১৪৪ জারি চেয়ে আবেদন করলে আদালত স্থানীয় সংশ্লিষ্ট বিভাগের তদন্ত রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪৪ ধারা জারি করেন। জুব্বাররা কাগজপত্রের ভিত্তিতে ১৪৪ ধারার বিপরীতে জজকোর্টে আপিল করেছেন। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে দুই পরিবারে মাঝে উত্তেজনা চলছিল।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে কালু মিয়া শেখ তার দলবল নিয়ে বিবদমান ৬০ শতক জমিতে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। আলমগীর ও জুব্বাররা তাতে বাধা দিতে গেলে তাদের প্রথমে পেটায় ও পরে গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন তারা। মা শাফিয়া ফেরাতে গেলে তাকেও গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয়। শাশুড়িকে রক্ষায় এগিয়ে আসেন ছেলের বউ জ্যোৎস্না বেগম। তাকেও হাত-পা বেঁধে বসিয়ে রাখেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এ অবস্থায় মধুপুর থানার পুলিশকে ফোন দিয়ে জানানো হলেও পুলিশ দ্রুত না আসায় নির্যাতিতদের পক্ষে ৯৯৯-এ কল করে সাহায্য চাওয়া হয়। পরে মধুপুর থানা পুলিশ এসে গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থা থেকে তাদের উদ্ধার করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারুন অর রশীদ ও স্থানীয় মাতব্বররা ঘটনাস্থলে এসে উভয়পক্ষকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। পরে মধুপুর থানা থেকে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে এবং আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, জমি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধের জেরে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। আজকের ঘটনায় কেউ লিখিত দেননি বলে মামলা হয়নি। দুই পক্ষকে ডেকে এনে ১৪৪ ধারা জারি ও তার আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শান্তি রক্ষায় জমিতে যেতে বারণ করা হয়েছে।

এফআই
আরও পড়ুন