মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনা ও বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াই চলছে। চলমান সংঘর্ষে গোলাগুলি, মর্টারশেল ও বোমা বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু বিস্তীর্ণ এলাকা। সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দারা জীবন বাঁচাতে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি এবং সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে উঠছেন।
রাখাইন রাজ্যে অব্যাহত সংঘর্ষের মধ্যে সাহস করেও যারা ভিটেমাটি আগলে পড়েছিলেন, মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) তারাও বাড়ি ছেড়ে যাওয়ায় গ্রামের গ্রামের পর বিরান হয়ে যাচ্ছে। বাড়ি ছাড়া লোকদের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ, কখন গুলি এসে গায়ে পড়ে।

মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর আরও শতাধিক সদস্য পালংখালী সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে ২৬৪ জন অনুপ্রবেশ করেছে বলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজীজ গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে সাংবাদিকদের বলেছেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে ২৭ পরিবারের প্রায় ১৩০ জন সদস্য আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া অনেকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন বলেছেন, গত তিনদিন ধরে সীমান্তবাসীকে নিরাপদে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেছি। কিন্তু অনেকেই চরম ঝুঁকির মুখে থাকলেও ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে চান না। তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় ঘুমধুম ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী ২৪০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রায় ১৫০ পরিবার আশ্রয়কেন্দ্র ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে। এ ইউনিয়নের জলপাইতলী গ্রামে সীমান্ত ঘেঁষে ৪০-৪৫টি পরিবার বসবাস করে। তাদের মধ্যে ৩০টি পরিবার অন্যত্র সরে গেছে। ঘুমধুমের পরিস্থিতি মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার একটু ভালো। আমরা আশা করছি, দ্রুত সব ঠিক হয়ে যাবে।
জানা গেছে, সীমান্তে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির অবসানে মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান শোয়ের সাক্ষাৎ চেয়েছেন ইয়াঙ্গুনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন। বুধবার মিয়ানমারের প্রশাসনিক রাজধানী নেপি'ডতে সাক্ষাৎ হতে পারে।
