ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

খেজুর নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে

আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৪, ০৫:৩১ পিএম

পবিত্র রমজানে খেজুরের দামের মূল্যবৃদ্ধি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ায় বগুড়ায় নিম্নবিত্ত মানুষের ক্রয় সীমার বাইরে চলে গেছে। তেমনি মধ্যবিত্তরাও হিমশিম অবস্থা খেজুর কিনতে। গত বছরের তুলনায় এবার খেজুরের কেজি প্রতি দাম ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে বগুড়া শহরের ফলপট্টিতে খেজুরের আড়ত, সাতমাথা, কাঁঠালতলা, ফতেহ আলী বাজার, কলেজ বাজার, কলোনী বাজার ও রাজাবাজার ঘুরে দেখা যায়, ইরাক, ইরান, মিশর, তিউনেশিয়া, সৌদি আরব থেকে আমদানি করা খেজুর বিক্রি করা হচ্ছে। খেজুরের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন জাতের আজওয়া, মেজজুল, মরিয়ম, সাফারি, মাবরুম, কালমি, দাবাস, জাহিদি, সায়ের, সুক্কারি ও মাশরুখ।

পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মরিয়ম খেজুর ১ হাজার টাকা, খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা। আজওয়া খেজুর পাইকারিতে কেজি প্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা ও খুচরায় ১৪০০ টাকা। মেজজুল খেজুর পাইকারি কেজি প্রতি ১ হাজার ৩৫০ টাকা ও খুচরা বাজারে ১৫০০ টাকা।

গত বছর রমজানে পাইকারিতে মরিয়ম ৭০০, আজওয়া ৯০০ ও মেডজুল হাজার টাকা কেজি ছিল। এবছর মাবরুম খেজুর পাইকারিতে প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ১ হাজার টাকা। গত বছর এই খেজুরের পাইকারি দাম ছিল ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা। মধ্যমানের দাবাস, মাশরুখ, সুক্কারি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর ছিল ২২০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। ইরাকের জাহিদি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি। যা গত বছর বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা কেজি দরে।

বগুড়ার খেজুর ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম বেশি হওয়ায় দামি খেজুরের চাহিদা কম। আর তাই সাধারণ মানুষ বাজারে তুলনামূলক কম দামি খেজুর খুঁজছেন। আমদানি নির্ভর হওয়ায় আমদানি ব্যয়, ভ্যাট, করসহ নানা খরচের কারণে খেজুরের দাম এবার গতবারের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। এছাড়া ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, কাস্টম ডিউটি ট্যাক্স ও রেগুলেটরি ডিউটি ট্যাক্স দাম বৃদ্ধির প্রধান কারণ।

বগুড়ার সায়েম ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী আব্দুল মান্নান বলেন, গত বছর থেকে হু হু করে খেজুরের দাম বেড়েছে। এবছর এক লাফে দাম হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। নতুন করে যোগ হয়েছে কাস্টম ডিউটি ২৫ শতাংশ। সঙ্গে রয়েছে রেগুলেটরি ডিউটি ও ভ্যাট ১৫ শতাংশ। এসব খাতে আগে এত রাজস্ব দিতে হতো না ব্যবসায়ীদের। মূলত এর প্রভাবই বেশি পড়েছে খেজুর আমদানিতে। এবার সরকারের নির্দেশে ভ্যাট ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করায়ও ব্যাংকে এলসি ও ডলারের সংকটের ফলে দাম কমছে না।

গাইবান্ধা থেকে খেজুর কিনতে আসা, সাইফুল, রফিক, সাইদুল ইসলাম জানান, গত বছর যে প্যাকেটে খেজুর ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় কিনেছি; এইবার সে খেজুর ৩ হাজার ৯০০ থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকায় কিনতে হলো। তারপরও সব আড়তে সব খেজুর নেই। ঘুরে ঘুরে কিনতে হয়েছে। যা দাম আর সব খরচ বাদে গ্রামে গিয়ে কেজিতে ১০ টাকাও লাভ করতে পারবো না।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়ত মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। কেউ বেশি মুনাফার লোভ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

MN/SA
আরও পড়ুন