ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

চায়না দুয়ারি জালে অস্তিত্ব সংকটে দেশীয় প্রজাতির মাছ

আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৪, ০২:৫০ পিএম

বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষা দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার খাল, বিলসহ মেঘনা নদীর তীরে অসংখ্য চায়না দুয়ারি নামের একপ্রকার ফাঁদ ব্যবহার করে মৎস্য সম্পদ ধ্বংস করে চলছে এক শ্রেণির অসাধু মাছ শিকারিরা।

স্থানীয়ভাবে চায়না দুয়ারিকে সংক্ষেপে চায়না জাল বলা হয়, যা ম্যাজিক জাল নামেও পরিচিত। মাছ ধরার বিশেষ একটি ফাঁদ। এই ফাঁদের কারণে জলাশয়গুলো দিন দিন মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে। কেননা, এই চায়না দুয়ারির দুই দিকে মুখ থাকার পাশাপাশি এক অভিনব পদ্ধতিতে প্রস্তুত করায় উজান ও ভাটি সব দিক থেকে মাছ ভেতরে ঢুকলে তা আর বের হতে পারে না। নদী বা খালের দুই ধারে এই জাল ব্যবহার করা হয়। ঘন ফাঁসের এই দুয়ারিতে পোনা মাছ থেকে শুরু করে ছোট বড় সব ধরনের মাছ আটকা পড়ায় ধ্বংস হচ্ছে মৎস্য সম্পদ।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বড়দেইল এলাকার জলাশয়-খাল, পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন জলাশয়, নলচিরা- জাহাজমারা প্রধান সড়ক সংলগ্ন খাল এবং মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে চায়না দুয়ারির ব্যাপক বিস্তার লক্ষ্য করা গেছে। 

এদিকে সারা বছরই খাল এবং নদীর তীরে এই ফাঁদ দিয়ে মাছ শিকার করলেও বর্ষা মৌসুমে অসাধু শিকারিরা মাছ ধরার মহোৎসবে নামে। জোয়ারের পানির সঙ্গে ডিমওয়ালা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ খাল, বিলসহ বিভিন্ন স্থানে বংশ বিস্তারের জন্য আসার গতিপথে পাতা হচ্ছে এই ফাঁদ। নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ নিধন বন্ধে কার্যকরী কোন অভিযান না হওয়ায় মূলত এসব অসাধু মাছ শিকারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে জানান বুড়িরচর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইরাক উদ্দিন।

একই ইউনিয়নের বড়দেইল এলাকার রাকিব, সোহরাব এবং পৌরসভা এলাকার ফারুসহ কয়েকজন মৎস্য শিকারির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথমদিকে এই দুয়ারি চীন হতে আমদানি করা হতো, দামও ছিল বেশি। বর্তমানে একই আদলে আমাদের দেশের বিভিন্ন কারখানায় তৈরি হচ্ছে এই ফাঁদ। চায়না দুয়ারির মূল্য আগের তুলনায় অনেক কম হওয়ায় নানা শ্রেণিপেশার মানুষ এই ফাঁদ ব্যবহার করে নিধন করছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।

এই ফাঁদের ব্যবহারের বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ হাসান জানান, এই ধরনের জালের ব্যবহার মৎস্য সংরক্ষণ আইন, ১৯৫০ অনুযায়ী নিষিদ্ধ। আমরা ইতোপূর্বে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছি। তবে মৎস্য সম্পদের বৃদ্ধি এবং নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার না করার জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ চাকমা বলেন, দেশের মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে বিধিমতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

SM/FI
আরও পড়ুন