পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বর্তমানে কার্যক্রম চালাচ্ছে ৮টিরও বেশি ইটভাটা, যার অধিকাংশেরই নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বা বৈধ অনুমোদন।
উপজেলার শুধু ঘুমধুম ইউনিয়নেই রয়েছে অন্তত ৭টি অবৈধ ইটভাটা। আর আইন অমান্য করে এসব ইটভাটা গড়ে উঠেছে পাহাড় কেটে ও বনাঞ্চল দখল করে।
সম্প্রতি বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জেলায় অবৈধ/অননুমোদিত সবল ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ রাখা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সামনের মৌসুমের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এসব ইটভাটাগুলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পরিবেশ অধিদপ্তর এসব ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে একাধিকবার ভেঙে দিয়েছে। তবে কিছুদিন পরই পুনরায় শুরু হয় একই অবৈধ কার্যক্রম। আসন্ন মৌসুমের জন্য বর্তমানে পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে এসব ইটভাটার মালিকরা।
আইন অনুযায়ী ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার কথা কয়লা এবং কাঁচামাল হিসেবে নদী বা জলাশয়ের মাটি। কিন্তু বাস্তবে এসব ইটভাটায় বনাঞ্চলের কাটা গাছ ও পাহাড়ের মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে, ফলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ির রেঞ্জ কর্মকর্তা বলেন, জনবল সংকটের কারণে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এসব ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় দূষিত হয় বাতাস ও আশপাশের পরিবেশ। অতিরিক্ত ইটবোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্থানীয়দের।
তারা আরও বলেন, পাহাড় কেটে মাটি উত্তোলন ও বনাঞ্চলের গাছ কেটে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের কারণে এলাকার পানির উৎস কমে যাচ্ছে এবং ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
পরিবেশবিদদের মতে, অবিলম্বে এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ না করলে পার্বত্য এলাকার বন ও পাহাড় ধ্বংসের পাশাপাশি স্থানীয়দের জীবনযাপনও হয়ে উঠবে অনিরাপদ ও অনুপযোগী।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও কীভাবে ইটভাটার কাজ চলছে- বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে ছাড় দেওয়ার কোন সুযোগে নেই। নির্দেশ না মানলে খুব শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হব।
চাঁদপুরে সদরে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে ৩ অবৈধ ইটভাটা
লালপুরে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা