ঢাকা
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

মৌসুমের প্রথম যাত্রায় সেন্টমার্টিনে ১,২০০ পর্যটক

আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৪১ এএম

অবশেষে অপেক্ষার অবসান হলো পর্যটকদের। সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে যাত্রা করেছে তিনটি যাত্রীবাহী জাহাজ- এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বার আউলিয়া ও কেয়ারি সিন্দাবাদ।

চলতি মৌসুমে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে এটি প্রথম যাত্রা, যেখানে অংশ নিয়েছেন প্রায় ১ হাজার ২০০ পর্যটক। ভোর থেকেই ঘাটে ছিল পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। টিকিট প্রদর্শনের পর জাহাজে প্রবেশের আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি যাত্রীর হাতে উপহার হিসেবে দেওয়া হয় পরিবেশবান্ধব পানির বোতল।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক অরুপ হোসেন বলেন, ‘প্রথমবার সেন্টমার্টিন যাচ্ছি, রোমাঞ্চকর লাগছে। প্রশাসনের প্রস্তুতিও ভালো লাগছে।’

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক অনুমতিপ্রাপ্ত জাহাজে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপে রাত্রিযাপনের সুযোগ থাকবে। ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোডসংবলিত টিকিট সংগ্রহ বাধ্যতামূলক। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে বিবেচিত হবে।

সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, ‘মোট ছয়টি জাহাজ চলাচলের অনুমতি পেয়েছে, যাত্রীর সংখ্যা বিবেচনায় প্রথম দিনে তিনটি জাহাজ ছেড়েছে। সকালবেলার জোয়ার-ভাটা ও নাব্যতা অনুযায়ী প্রতিদিন যাত্রার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। বিকেলে সেন্টমার্টিন থেকে জাহাজগুলো কক্সবাজারে ফিরবে।’

গত বছর থেকেই টেকনাফ রুট বন্ধ থাকায় কক্সবাজার থেকে দীর্ঘ সমুদ্রপথ পাড়ি দিতে হচ্ছে পর্যটকদের। এতে ক্লান্তি বাড়তে পারে বলে মনে করেন চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক রোকসানা আলী। 

তিনি বলেন, ‘টেকনাফ থেকে যাতায়াত সহজ ছিল, এখন দূরত্ব বেশি হওয়ায় কষ্ট হয়। তবু সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়।’

ঘাটে তল্লাশির পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। কক্সবাজার রিজিয়নের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ‘জাহাজে ও দ্বীপে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের সদস্যরা প্রস্তুত আছে।’

সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গত অক্টোবরে সরকার নতুন ১২টি নির্দেশনা জারি করেছে। এতে রাতের বেলা সৈকতে আলো জ্বালানো, উচ্চ শব্দে অনুষ্ঠান, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়াফল সংগ্রহ-ক্রয়-বিক্রয়সহ সামুদ্রিক প্রাণীর ক্ষতি করতে পারে এমন সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল ও সি-বাইক চলাচল এবং পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যবহারও কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

প্রথম দিনের যাত্রা পরিদর্শনে এসে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘নির্দেশনাগুলো কঠোরভাবে বাস্তবায়নে প্রশাসন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং এ ক্ষেত্রে পর্যটক ও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

১ নভেম্বর থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের প্রবেশ আবার চালু হলেও নভেম্বর মাসে রাত্রিযাপনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেসময় কক্সবাজার থেকে কোনো জাহাজ চলেনি।

DR/SN
আরও পড়ুন