মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার গুয়াগাছিয়া এলাকা সংলগ্ন মেঘনা নদীতে পুলিশের অভিযানকালে জলদস্যুদলের অস্ত্রধারী সদস্যদের সাথে পুলিশের গুলিবিনিময়ের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে গজারিয়া ও মতলব উত্তরের মধ্যবর্তী মেঘনা নদীতে পুলিশ ও দস্যুদলের সদস্যদের মধ্যে পাল্টা-পাল্টি গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার আলম আজাদ জানান, বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে ৫/৬টি ইঞ্জিনচালিত ষ্টিল বডির নৌকা (ট্রলার) নিয়ে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা নদীতে মহড়া দেওয়াসহ নৌযানে চাঁদাবাজি করছে এমন খবর পেয়ে পুলিশ নদীতে অভিযানে নামে।
এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল গোলাগুলি হয়। পরে পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে পালিয়ে যায় জলদস্যুদল।
ওসি আরও জানান, পুলিশের আভিযানিক দলের সদস্যদের লক্ষ্য করে জলদস্যুদল প্রথমে ৪/৫ ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়, পুলিশ গুলিবর্ষণ করে দস্যুদলকে প্রতিরোধ করার সময়ে তারাও পাল্টা গুলিবর্ষণ করে।
এ সময়ে পুলিশ চায়না রাইফেলের ১৩ রাউন্ড, শর্টগানের ৬ রাউন্ড ও পিস্তলের ৫ রাউন্ড গুলি ছোড়ে।
ওই ঘটনায় জলদস্যুদল নৌ ডাকাত দল বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের ৬০ থেকে ৭০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।
গুয়াগাছিয়া এলাকার জামালপুর গ্রামের একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে ৫/৬টি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন নদীতে মহড়া শুরু করে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা।
নদীতীরবর্তী পুলিশ ক্যাম্পের কাছাকাছি নদীতে এসে প্রথমে ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরবর্তীতে ট্রলার থেকে পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে ডাকাত দলের সদস্যরা। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।
পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে বিকাল ছয়টার দিকে নৌডাকাত দল ট্রলারসহ মতলবের দিকে পালিয়ে যায়।
অভিযানে অংশগ্রহণকারী পুলিশের সূত্র জানান, ‘পিয়াসের নেতৃত্বে ৫/৬টি ট্রলার নিয়ে অন্তত পক্ষে ৩০/৩৫জন নৌ ডাকাত পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় সন্ত্রাসীরা নদীতে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে তারা। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে আমরাও পজিশন ঠিক করে সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য করে গুলি করতে থাকি। আমাদের দিক থেকে ২০ রাউন্ডের অধিক গুলিবর্ষণ করা হয়েছে।
পাল্টা-পাল্টি গুলিবর্ষণে কোনো পুলিশ সদস্য আহত হয়নি, তবে কোনো ডাকাত আহত হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
গজারিয়া উপজেলার নদী বিচ্ছিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল গুয়াগাছিয়ায় সক্রিয় কয়েকটি নৌ ডাকাত দল। অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা, নৌযানে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে গত কয়েক মাসে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস ও লালু বাহিনীর হাতে খুন হয় ডাকাত সর্দার বাবলা, স্যুটার মান্নান ও হৃদয় বাঘ। ওই এলাকায় নৌ ডাকাতদের অপতৎপরতা কমাতে ২২ আগস্ট ইউনিয়নটির জামালপুর গ্রামের মেঘনা নদীর তীরে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয়। ক্যাম্প চালুর ব্যাপারে প্রথম থেকে বিরোধিতা করে আসছিল নৌ ডাকাত গ্রুপগুলো।
