
নাজিরপুর উপজেলার তারাবুনিয়া গ্রামের দুই সহোদর হংসপতি মিস্ত্রি ও হিমাংশু মিস্ত্রি ২০০৭ সালে তাদের পাঁচ একর জমিতে চায়না থ্রি ও মোজাফফরপুরী জাতের লিচু বাগান করেন। প্রথম বছরই সাফল্য পান তারা । তাদের দেখে এলাকার অনেক কৃষক ধানের আবাদ বাদ দিয়ে লিচু বাগান করেছেন।
সম্প্রতি দেখা গেছে, এখন শুধু তারাবুনিয়া নয়, উপজেলার অনেক গ্রাম লিচুর ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। লিচু চাষে অবশিষ্ট থাকছেনা এক খণ্ড জমিও। নাজিরপুরে প্রায় অর্ধশত কৃষক আবাদ করেছেন চায়না থ্রি ও মোজাফফর পুরী জাতের লিচু।
লিচু চাষে সফল হংসপতি মিস্ত্রি বলেন, বছর-বছর লিচুর ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবার বছর লিচুর ফলন খুবই ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় লিচু অনেকটা ঝরে পড়েছে। তাছাড়া অনাবৃষ্টির কারণে আকারে অনেকটা ছোট হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, রাসায়নিক মুক্ত এবং জৈব পদ্ধতিতে লিচু চাষ করায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ও জেলার ব্যবসায়ীরা আসেন লিচু কিনতে। তবে তীব্র তাপপ্রবাহের কারনে লিচু তেমন বড় হয়নি। বৃষ্টি না থাকার কারণে ফল ঝরে যাচ্ছে এবং ফুল কম ফুটছে। ফলের আকার ছোট হয়েছে।
এখান থেকে কিনে ভালো দামে বিভিন্ন এলাকায় লিচু বিক্রি করছেন পাইকাররা। নাজিরপুরের মাটি ও আবহাওয়া লিচু চাষের উপোযোগী হওয়ায় আগামীতে এ অঞ্চলে লিচু বাগান আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

লিচু বাগানে গিয়ে দেখা যায়, লিচু আহরণ, বাছাই এবং প্যাকেট করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় লিচু ব্যবসায়ী দুলাল হাওলাদার বলেন, এ বছর লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। এখান থেকে লিচু কিনে বেশি লাভ পাওয়া যায়। কারণ যাতায়েত খরচ কম লাগে।
পিরোজপুর জেলা সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি সময়ে কৃষকদের মাঝে লিচু চাষের প্রবণতা দেখা গেছে। এই মাটিতে লিচু সম্প্রসারণ করা যায় সেই বিষয়ে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। চিন্তা-ভাবনা রয়েছে এটি বৃদ্ধি করার। জেলার তিন উপজেলায় ৫৫ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ করা হয়েছে ।
তিনি আরও বলেন, টানা তাপপ্রবাহে বেশ কিছু গাছের লিচুর গুটি ঝরে পড়েছে, বড় অবস্থায়ও লিচু ঝরে পড়েছে। অনাবৃষ্টির কারণে লিচুর আকারও ছোট।
