ঢাকা
সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

মজুদখালী নদীতে কুমির, আতঙ্কে গ্রামবাসী

আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৪, ১০:০৬ এএম

যশোরের অভয়নগর উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নে ভৈরব নদের ত্রিমোহনী থেকে বয়ে যাওয়া নদীর নাম মজুদখালী। সম্প্রতি মজুদখালী নদীতে কয়েকটি কুমিরের দেখা মিলেছে। যে কারণে মাছ ধরতে পারছে না জেলেরা।

স্থানীয়দের অনেকেই নদীতে কুমির ভাসতে দেখেন। একটি নয়, বরং নদীতে ৫ থেকে ৬ টি কুমির ভাসতে দেখা যায় বলে দাবি তাদের। এর পর জনমনে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। বহু কষ্টে দিনাতিপাত করলেও জেলে পরিবারের কেউ নদীতেই নামছেন না।এখন কুমির আতঙ্কে কাটছে দুই গ্রামের মানুষ দিন। এদিকে বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

নওয়াপাড়া নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নে ভৈরব নদের ত্রিমোহনী থেকে মজুদখালী নদী সুন্দরবন হয়ে খুলনার রুপসা ও শিপসা নদীতে গিয়ে মিলেছে। খাবারের সন্ধানে সুন্দরবন থেকে এসব কুমির লোকালয়ে চলে আসতে পারে। তাই  সতর্কতার সঙ্গে নদীতে নামার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

সরেজমিনে গত সোমবার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়,  জয়রাবাদ গ্রামে শ্মশানের পাশে নদীর মাঝে একটি কুমির ভেসে রয়েছে। কুমিরটি ধীর গতিতে নলামারা গ্রামের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর সেই কুমির দেখতে গ্রামবাসী ভিড় করেছে। এ সময় জয়রাবাদ গ্রামের নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, শনিবার দুপুরে গোসল করতে নদীতে নামেন তিনি। ডুব দেওয়ার পর কাঁটাযুক্ত লেজ জাতীয় কিছু তার কোমর ও হাতে আঘাত করে। এ সময় পাশে কুমির দেখে বিষয়টি বুঝতে পারেন এবং কোনো মতে প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হন তিনি।

নলামারা গ্রামের নৌকার মাঝি বিমল কান্তি বলেন, নলামারা ও জয়রাবাদ গ্রামের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া মজুদখালী নদীতে ৫/৬টি ছোট-বড় কুমির ঘুরতে দেখেছেন তিনি। রোববার বিকালে খেয়া পারাপারের সময় একটি কুমির তার নৌকায় আঘাতও করেছে। ক্ষয়ক্ষতি না হলেও চরম আতঙ্কের মধ্যে যাত্রী নিয়ে পারাপারের কাজ করছেন তিনি।

দুই গ্রামের বাসিন্দা ও জেলেদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, কুমিরের কারণে নদীতে নামতে পারছে না তারা। ইতোমধ্যে কুমিরের আক্রমণে বেশ কয়েকটি হাঁস হারিয়ে গেছে। জেলেরা আতঙ্কিত হয়ে মাছ শিকার বন্ধ করে দিয়েছেন। দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা। 

জয়রাবাদ গ্রামের ইউপি সদস্য বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, মানুষ নদীতে নামতে ভয় পাচ্ছে। হঠাৎ কুমির ঢুকে পড়ায় চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি আমরা। তবে বন বিভাগের লোক এসে কুমির মারতে বা ধরতে নিষেধ করে গেছেন।

সিদ্ধিপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম বলেন, এলাকাবাসী, মাঝি ও জেলেদের সতর্কতার সঙ্গে নদীতে নামার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা মৎস্য ও নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। 

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এনামুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জয়রাবাদ ও নলামারা গ্রামবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে। স্থানীয় জেলে সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।  

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম আবু নওশাদ বলেন, কুমির তো আর সীমানা চেনে না। খাবারের সন্ধানে বিভিন্ন নদ-নদীতে চলে আসতে পারে। তবে বন বিভাগের সঙ্গে কথা হয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকরী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

SM
আরও পড়ুন