'শিক্ষকতা পেশা: মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে সাতক্ষীরায় বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্ব শিক্ষক দিবস-২০২৫ উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও শিক্ষা প্রশাসনের আয়োজনে রোববার (৫ অক্টোবর) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় অনুষ্ঠিত হয়।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল হাসেম, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বাসুদেব বসু, জেলা শিক্ষা অফিসার মুফতি আবুল খায়ের, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমিন, সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আসাদুজ্জামান, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম টুকু, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি জেলা শাখার সভাপতি মো. আমানুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মালেক গাজী, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি সদর উপজেলা শাখার সভাপতি মো. মোমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ, আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. আখতারুজ্জামান, অধ্যাপক ওবায়দুল হক, শিক্ষক নেতা প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ, মো. আব্দুর রাজ্জাক, সিলভার জুবলি সরকারি মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক চায়না ব্যানার্জি, ফরিদা খাতুন, মাওলানা মিজানুর রহমান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে এবং শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে করণীয় বিষয়ে কন্টেন্ট উপস্থাপন করেন সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমিনুল ইসলাম টুকু।
আলোচনা সভায় বক্তারা শিক্ষকতার একাল-সেকালের বর্ণনা তুলে ধরে শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষায় একটি 'কমপ্লিট এডুকেশন পলিসি' প্রণয়নপূর্বক তা বাস্তবায়নের দাবি জানান।
বক্তারা শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকের সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, শিক্ষক হলেন সেই মোমবাতি, যিনি নিজে জ্বলে অন্যকে আলো দেন। এই দিনে আমরা মাথা নত করি সেই সব শিক্ষক-গুরুজনের প্রতি, যাদের ত্যাগ, মমতা ও জ্ঞানের ঋণ কোনোদিন শোধ করা যায় না।
আলোচনা সভায় বক্তারা আরও বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষকরা সমাজ গঠনের মূল চালিকাশক্তি। তাই শিক্ষকদের পেশাগত মর্যাদা, প্রশিক্ষণ ও কল্যাণ নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
অনুষ্ঠানে বিশ্ব শিক্ষক দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তারা বলেন, সহযোগিতামূলক শিক্ষা পরিবেশ গড়ে তুলতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে সমন্বয় অপরিহার্য।
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে সকল বৈষম্য দূর করে সমতা ফিরিয়ে আনার প্রতি সরকারের কাছে দাবি জানান বক্তারা। এছাড়া শিক্ষকের দক্ষতা ও উন্নয়নে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়। শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি তুলে ধরে বক্তারা অবিলম্বে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান শিক্ষক নেতারা। তারা কোচিং সেন্টার ও নোট-গাইড পরিহার করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর শতভাগ হাজিরা নিশ্চিত করার তাগিদ দেন। এছাড়া বাল্যবিবাহ ও মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক ব্রিগেড গড়ে তোলার আহ্বান জানান বক্তারা।
অনুষ্ঠানে জেলা পর্যায়ে নির্বাচিত ৪ জন গুণী শিক্ষককে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
তারা হলেন- কলারোয়া সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. মারুফ কবির, সহযোগী, কালিগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রকৌশলী মো. হুমায়ন কবীর, কলারোয়া উপজেলার রামভদ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনজুরুল ইসলাম ও শ্যামনগর উপজেলার হায়বাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আমিনুর রহমান।
নির্বাচিত গুণী শিক্ষকরা এ সময় তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রিপন বিশ্বাস।
অন্যরকম শিক্ষক দিবস পালন করলো আদ্-দ্বীন নার্সিং ইনস্টিটিউট