ঢাকা
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

দেশে প্রথম ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র রাজশাহীতে

আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৯ পিএম

রাজশাহীতে দেশের প্রথম ঘড়িয়াল প্রজননকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে জেলার পবা উপজেলায় নার্সারির একটি পুকুরে ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র করা হয়েছে। সেখনে গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে আনা একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী পূর্ণবয়স্ক ঘড়িয়াল অবমুক্ত করা হয়েছে।

ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন ঢাকা বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। তিনি বলেন, একসময় বাংলাদেশের ব্রহ্মপুত্র, পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদীতে ঘড়িয়াল দেখা গেলেও নদীদূষণ, নদীর নাব্যতা হ্রাস, অতিরিক্ত মাছ আহরণ, অবৈধ শিকার, পাচার, ডিম নষ্ট, প্রজননে ব্যাঘাত ঘটানো ও খাদ্যসংকটের কারণে ঘড়িয়াল এখন বিলুপ্তির পথে। ঘড়িয়ালের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে রাজশাহীতে দেশের প্রথম ঘড়িয়াল প্রজননকেন্দ্র করা হলো। এখানে ঘড়িয়ালের প্রজননের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- ঘড়িয়াল, বৈজ্ঞানিক নাম গ্যাভিয়ালিস জ্যানজেটিকাস (Gavialis gangeticus), জলজ পরিবেশের এক শান্ত স্বভাবের বাসিন্দা। লম্বা সরু চোয়াল আর জলচর জীবনে নিখুঁত অভিযোজন এই প্রাণীটিকে আলাদা করেছে অন্যসব কুমির প্রজাতি থেকে। একসময় বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীতে ঘড়িয়ালের অবাধ বিচরণ ছিল। কিন্তু সময়ের নিষ্ঠুরতায় এখন সেটি ইতিহাস। নদীর পানি দূষণ, অতিরিক্ত মাছ আহরণ, অবৈধ শিকার, ডিম নষ্ট করে দেওয়া, প্রজননের সময় আশ্রয়স্থল নষ্ট হওয়া—সব মিলিয়ে বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে এই প্রজাতিটি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২-তেও এটি একটি রক্ষিত প্রাণী।

এ বিষয়ে রাজশাহী সামাজিক বন বিভাগ ও বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন বিভাগের কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান শাহ বলেন, দেশের প্রথম ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়েছে রাজশাহীতে। ঘড়িয়ালের মতো একটি স্পর্শকাতর ও বিপন্ন প্রজাতির প্রজনন সহজ কাজ নয়। এর জন্য প্রয়োজন নিবিড় পর্যবেক্ষণ, বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থাপনা এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। কেন্দ্রটিকে শিক্ষনীয় সফরের স্থান হিসেবেও গড়ে তোলা হবে। পবার একটি পুকুরে ঘড়িয়ালের প্রজনন নিয়ে গবেষণা করা হবে। পরবর্তিতে সেগুলো নদীতে ছেড়ে দেওয়া হবে।  

এসময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. এম সালেহ রেজা, বগুড়া সামাজিক বন অঞ্চলের বন সংরক্ষক মুহাম্মদ সুবেদার ইসলাম, ঢাকা বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ছানাউল্ল্যা পাটওয়ারী, রাজশাহী সেভ দি ন্যাচার এন্ড লাইফের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানসহ বন অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও স্থানীয় পরিবেশবাদী সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

AHA
আরও পড়ুন