ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

জিআই স্বীকৃতির দ্বারপ্রান্তে জামনগরের ঐতিহ্যবাহী শাঁখা

আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:১০ পিএম
শত শত বছরের ঐতিহ্যের সাক্ষী নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের শাঁখারীপাড়া একসময় শাঁখাশিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল।  
 
হিন্দু সমাজে শাঁখা শুধু অলঙ্কার নয়, এটি শুভলক্ষণ ও সৌভাগ্যের প্রতীক। সনাতন ধর্মাবলম্বী বিবাহিত নারীর হাতে শাঁখা মানে সামাজিক ও ধর্মীয় মর্যাদার বহিঃপ্রকাশ।
 
সেই ঐতিহ্য আঁকড়ে ধরে এখনও প্রায় ২০০ পরিবার শাঁখা তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। তবে নানা প্রতিবন্ধকতায় এই শিল্পের টিকে থাকা দুষ্কর হয়ে পড়েছে।
 
কারণ এর মূল উপকরণ শঙ্খ এখন আর দেশে উৎপাদন হয় না। ভারত ও শ্রীলঙ্কা থেকে আমদানি করা এই কাঁচামালের দাম দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে। ফলে স্থানীয় কারিগররা পুঁজির সংকটে ভুগছেন।
 
 
অন্যদিকে ভারত থেকে কম দামে তৈরি শাঁখা বাজার দখল করায় নাটোরের হাতে তৈরি শাঁখার চাহিদা কমে গেছে।
 
শাঁখাশিল্পী নিরেন চন্দ্র সেন বলেন, আমরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই কাজ করে আসছি। আগে হাতে ঘষে দিনে ৫ জোড়া শাঁখা তৈরি হতো, এখন মেশিনে দিনে ৫০ জোড়া পর্যন্ত হয়। কিন্তু কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভ খুব একটা থাকে না।
 
স্থানীয় ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর কোটি টাকার শাঁখা বিক্রি হয়। জিআই স্বীকৃতি পাওয়া গেলে বিদেশে রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে।
 
 
শাঁখাশিল্পের রয়েছে নানান প্রকারভেদ। যেমন- পাথর শাঁখা, সাদা শাঁখা, সোনা শাঁখা, কড়ি শাঁখা, মোটা-চিকন শাঁখা, চুড়া শাঁখাসহ আরও নানা ধরন। এর মধ্যে কিছু শাঁখার দাম ২০০ টাকা থেকে শুরু হলেও কারুকার্য খচিত শাঁখার দাম ৩ হাজার টাকারও বেশি।
 
পুরুষরা সাধারণত কাটাকুটি ও কাঠামো তৈরি করেন, আর নারীরা কারুকাজে দক্ষতা দেখান। অনেকে আবার অনলাইনের মাধ্যমে সরাসরি সারাদেশে শাঁখা বিক্রি করছেন। বিশেষ করে দুর্গাপূজা ও বিয়ের মৌসুমে তাদের ব্যবসা জমে ওঠে।
 
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারুফ আফজাল রাজন বলেন, শাঁখাশিল্পকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলে এই শিল্প জাতীয়ভাবে পরিচিতি পাবে।
NJ
আরও পড়ুন