হাসপাতালের কর্মচারীরা দেখছেন রোগী, দিচ্ছেন ব্যবস্থাপত্র। বহির্বিভাগের নানা অনিয়মে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে এখন ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। এখন ভোগান্তির অন্য নাম লালমনিরহাট জেলা সদর হাসপাতাল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের ২০৬ নাম্বার রুমে পুরুষ রোগী দেখা হয়। যেখানে একজন মেডিক্যাল অফিসার রোগী দেখার কথা। কিন্তু তিনি নিয়মিত বসেন না। তার স্থানে নাজির হোসেন নামে চতুর্থ শ্রেণির একজন কর্মচারী রোগী দেখছেন।
২১৩ নাম্বার রুমে শিশু রোগী দেখা হয়। এখানে রোগী দেখছেন এবং ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন আবির নামে একজন উপসহকারী মেডিক্যাল অফিসার এবং রাসেল ও রাসেল (২) নামে দুইজন বহিরাগত। কিন্তু নিয়ম হলো একজন শিশু বিশেষজ্ঞ অথবা মেডিক্যাল অফিসার এসব শিশু রোগী দেখবেন।
২১৭ নাম্বার রুমে মহিলা রোগী দেখা হয়। এখানে রোগী দেখেন ডা. শাহাব উদ্দিন। তিনি মেডিক্যাল অফিসার (ইউনানী)। তিনি ৪ দিনের ছুটিতে থাকায় ওই রুমে রোগী দেখছেন কম্পাউন্ডার বুলবুল আহমেদ ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সাইফুল ইসলাম। তারা অন্য চিকিৎসকের ওষুধের নাম লেখা সিল ব্যবহার করছেন।
হাসপাতালে নিজেকে দেখাতে আসা রোগী তহমিনা বেগম জানান, আউটডোরে অধিকাংশ চিকিৎসক রোগীর কোনো কথা না শুনেই ২ থেকে ৩টা মেডিসিনের নাম লিখে ছেড়ে দিয়েছেন। এ সময় একাধিক রোগী বাইরে এসে অভিযোগ করে বলেন, কিছুই শুনলোনা কি ওষুধ দিল? এটা খেয়ে কি হবে।
আরেক রোগী মোহসেনা বেগম জানান, হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে পরীক্ষা করাতে এসেছিলাম। আমার কাছ থেকে প্যাথলজি রুমে রিপোর্ট দেওয়ার সময় অতিরিক্ত টাকা নিয়েছেন দায়িত্বরতরা।
আরেক পুরুষ রোগী কোরবান আলী জানান, জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন ডাক্তার মোহাম্মদ রুবেল মিঞা প্রায়ই অফিস চলাকালীন সময়ে বাইরে রোগী দেখে আবার অফিসে আসেন। এসব ব্যাপারে ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজনরা অভিযোগ করলেও কোনো কাজ হয়নি।

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মোকাদ্দেস জানান, হাসপাতালের জনবল সংকট। ১০০ শয্যার জনবল দিয়ে চালানো হচ্ছে ২৫০ শয্যা হাসপাতাল। বর্তমানে হাসপাতালে রয়েছে মাত্র ৭ জন চিকিৎসক।
তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্থানে হাসপাতালের কোনো কর্মচারী বা বহিরাগত কেউ রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে থাকলে দ্রুত এর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
