জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেন্টারে (জেআইসি) গুম ও নির্যাতনের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ ১৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন।
এদিন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ মামলায় শুনানি করেন স্টেট ডিফেন্স ও উপস্থিত আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
গত ৭ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। জেআইসি সেলে সরকারবিরোধী ঘরানার লোকদের তুলে নিয়ে গুম-নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি। একইসঙ্গে ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুম হওয়া ২৬ জনের বীভৎসতা সামনে আনেন। এসব ঘটনায় পাঁচটি অভিযোগ এনে এ মামলায় ১৩ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর। পরে স্টেট ডিফেন্স ও গ্রেপ্তার তিন আসামির পক্ষে সময় চাইলে শুনানির জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল।
এদিকে সকাল ১০টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে এ মামলায় গ্রেপ্তার তিন সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে জেআইসি সেল বা আয়নাঘরে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় করা এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আসামি ১৩ জন।
হাজির হওয়া তিন কর্মকর্তা হলেন–ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজহার সিদ্দিকী।
শেখ হাসিনাসহ পলাতক অন্য আসামিরা হলেন–শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) লে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আকবর হোসেন, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) সাইফুল আবেদিন, লে. জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, সাবেক ডিজি লে. জেনারেল তাবরেজ শামস চৌধুরী, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক, মেজর জেনারেল তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল কবির আহাম্মদ ও লে. কর্নেল (অব.) মখসুরুল হক।
এর আগে গত ২৩ নভেম্বর পলাতকদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। স্বেচ্ছায় লড়তে চাইলে শেখ হাসিনার আইনজীবী হন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না। তবে শারীরিক অসুস্থতা দেখিয়ে ৩ ডিসেম্বর তা প্রত্যাহার করলে মো. আমির হোসেনকে শেখ হাসিনার আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা এ মামলার তিন সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠান আদালত।
একইসঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজিরের জন্য সাত দিনের মধ্যে দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। ৮ অক্টোবর এ মামলায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
সাক্ষ্য দিতে ট্রাইব্যুনালে হাসনাত আবদুল্লাহ
ট্রাইব্যুনালে ৩ সেনা কর্মকর্তা
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেবেন হাসনাত