আদালতের নির্দেশের পর রংপুর বিভাগের তিন জেলার ৩৩৫ টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে সরকার।
রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারের পক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে বলা হয়, বিবাদী পক্ষ ইতিমধ্যে রংপুর বিভাগের ১৭২ টি অবৈধ ইট ভাটার মধ্যে ১১৪ টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গাইবান্ধা জেলার ১৫৫ টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ৮৭ টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা হয়েছে। দিনাজপুর জেলার ১৭৫ টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ১৩৪ টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা হয়েছে।
বিচারপতি জেবিএম হাসান এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের আদালতে মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং আদালত সম্পূর্ণ কমপ্লায়েন্স দেওয়ার জন্য ২৩ জুলাই দিন ধার্য করেন।
সারা দেশের অবৈধ ইটভাটার পরিচালনা বন্ধ করার নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ ২০২২ সালে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। আদালত শুনানি শেষে রুল জারি করে অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশনা প্রদান করেন হাইকোর্ট।
পরবর্তীতে এক সম্পূরক আবেদনের উপর শুনানি শেষে আদালত রংপুর বিভাগের সকল অবৈধ ইটভাটার তালিকা আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিলে রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার আদালতে এফিডেভিট দিয়ে আদালত উক্ত তালিকা দাখিল করেন। যেখানে বলা হয় রংপুর বিভাগে মোট বৈধ ইনভাটার সংখ্যা ৮১২ টি।
উক্ত অবৈধ ইট ভাটার তালিকা দাখিলের পর আদালত গত ৩০ মে পুনরায় আদেশ দিয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন এবং আদালতে কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দেন।
এইচআরপিবির পক্ষের কৌশলী সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, সারা দেশের মতো রংপুর বিভাগীয় শত শত অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করা হচ্ছে। আদালতের নির্দেশের পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় কিন্তু আইন ও বিধি অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের উপর ইটভাটা লাইসেন্স প্রদান এর দায়িত্ব যেমন দেওয়া হয়েছে তেমনি অবৈধ ইটভাটা বন্ধের ও দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
কিন্তু, বাস্তবতা হলো শত শত ইটভাটা কৌশলে প্রশাসনের সহযোগিতায় বা নিষ্ক্রিয়তায় এই অবৈধ কর্মকাণ্ডগুলো পরিচালনা করছে। যার কারণে শিশু নারী সহ সকল মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে এবং পরিবেশের মারাত্মক দূষণ হচ্ছে।
রিট মামলায় এইচআরপিবির পক্ষে আবেদনকারীরা হলেন- অ্যাডভোকেট ছারওয়ারা আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এখলাস উদ্দিন ভূঁইয়া ও অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল। অপরদিকে বিবাদীরা হলেন- সচিব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সচিব পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়। সচিব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সকল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনের সহ মোট ২১ জন।
মঙ্গলবার এইচআরপিবির পক্ষে মামলাটি শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন এডভোকেট নাররিন সুলতানা এবং অ্যাডভোকেট সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এএজি কালিপদ মৃধা।
