সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী রুকমিলা জামানসহ ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংকের সাবেক (ইউসিবি) ২০ জন পরিচালক ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ২৬টি বিও হিসাব (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব অ্যাকাউন্টে ৫৭৬ কোটি ৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকার শেয়ার রয়েছে। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন ৯ জুলাই এ আদেশ দেন।
সাইফুজ্জামানের স্ত্রী রুকমিলা জামান ছাড়া অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ হওয়া ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক ১৯ পরিচালক হলেন- বজল আহমেদ, আনিসুজ্জামান চৌধুরী, আক্তার মতিন চৌধুরী, এম এ সবুর, ইউনুস আহমেদ, এম এ কালাম, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, আসিফুজ্জামান চৌধুরী, সায়েদ মোহাম্মদ নুরুদ্দিন, রুকসানা জামান, আফরুজা জামান, সৈয়দ কামরুজ্জামান, মোহাম্মদ শাহ আলম, প্রফেসর ড. মো. জোনায়েদ শফিক, ড. কনক কান্তি সেন, ড. অপরূপ চৌধুরী, তৌহিদ শিপার রফিকুজ্জামান ও আরিফ কাদরী।
দুদক সূত্রে জানা যায়, অবরুদ্ধ হওয়া এসব বিও হিসাবে রুকমিলা জামানের ৩১ লাখ ৯৩০টি, বশির আহমেদের ৩১ লাখ ১৮ হাজার ৩৮৫, সাবেক মন্ত্রীর ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরীর ৪৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯৭৩টি, তার স্ত্রী রুকসানা জামানের ৩১ লাখ ৩ হাজার ৮৯টি, এম এ সবুরের ৩৩ লাখ ৬৭ হাজার ১০৮টি, বজল আহমেদের ২৫ লাখ ৮৫ হাজার ৬৪২টি, নুরুল ইসলাম চৌধুরীর ৩১ লাখ ১ হাজার ৩৭৬টি, আসিফুজ্জামান চৌধুরীর ৪৩ লাখ ৭৩ হাজার ৪৬৬টি শেয়ার রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, সাইফুজ্জামান সংশ্লিষ্ট সাতটি প্রতিষ্ঠানের বিও হিসাব আদালতের আদেশের আওতায় এসেছে। সেগুলো হলো- ভলকার্ট ট্রেডিং, লিজেন্ডারি এসেট ম্যানেজমেন্ট, স্পেলেন্ডেড ট্রেডিং, আরামিট থাই এলমিনিয়াম, অর্ডেন্ট এসেট মেনেজমেন্ট, নাহার মেটালস ও এরোমেটিক প্রোপার্টিস। এসব প্রতিষ্ঠান সাইফুজ্জামান চৌধুরী বা তার পরিবারের মালিকানাধীন অথবা ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে পরিচালিত হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ ফের সরকার গঠন করলে ইউসিবি ব্যাংক পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত হন সাইফুজ্জামান চৌধুরীর পরিবার। ২০১৮ সালে পুরোপুরিভাবে ব্যাংকটির দায়িত্ব নেয় তার পরিবার। নিজে মন্ত্রী হওয়ার পর স্ত্রী রুকমিলা চৌধুরীকে বানান ব্যাংকের চেয়ারম্যান। গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। পরবর্তী সময়ে ১২টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে অন্যতম ইউসিবি ব্যাংক। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে কোনো আর্থিক সহায়তা ছাড়াই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে ব্যাংকটি। মাত্র দেড় মাসেই এক লাখেরও বেশি নতুন গ্রাহক সংগ্রহ করে তারা, বাড়ে আমানতের পরিমাণও। এরই মধ্যে পুঁজিবাজারেও বাড়ে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম।
