জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত নবম ও দশম শ্রেণির ইংরেজি পাঠ্যবইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের মৃত্যুর তারিখ নিয়ে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। নবম ও দশম শ্রেণির ইংরেজি বইয়ে ‘গ্রাফিতি’ অধ্যায়ে উল্লেখ রয়েছে, ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ শহীদ হন।
তবে একই শ্রেণির বাংলা সাহিত্য বইয়ে ‘আমাদের নতুন গৌরবগাথা’ শিরোনামে অধ্যায়ে সঠিক তারিখ অর্থাৎ ১৬ জুলাই লেখা হয়েছে।
পাঠ্য বইয়ে এই ভুলকে একটি 'নির্মম ভুল' দাবি করে মিরপুরের একটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, আবু সাঈদ কবে শহীদ হন তা সবাই জানে। তিনি বলেন, 'আমার মনে হয় পাঠ্যপুস্তক লেখকদের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই।'
এ বিষয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম রিয়াজুল হাসান জানান, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন এবং বিভ্রান্তি সংশোধন করবেন।
২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
২০২৪ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। গুলি লাগার মুহূর্তে রাজপথে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা আবু সাঈদের ছবি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে পুলিশ আবু সাঈদকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। আর আবু সাঈদ এক হাতে লাঠি নিয়ে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি লুটিয়ে পড়েন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।
আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে শেখ হাসিনার মিথ্যাচার!