শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও প্রো-ভিসি অধ্যাপক এস কে শরীফুল আলম পদত্যাগ করেছেন।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বৃত্তি এবং প্রকৌশল শাখার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার পরও যখন বিষয়টা সুরাহা হচ্ছিল না, তখন উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে বিষয়টি বিবেচনার জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়। এরপর তারা পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।
তিনি জানান, নিয়ম অনুযায়ী এ পদত্যাগপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির দপ্তরে পাঠানো হবে। তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণ করলে তা কার্যকর হবে।
এদিকে, ভারপ্রাপ্ত ভিসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিভিল ফ্যাকাল্টির ডিন হারুন অর রশিদকে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাত ১টায় স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার এর নিচতলায় প্রদর্শনী রুমে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. তানজীম উদ্দিন খান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সামনে মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন পড়ে শোনান।
এ সময় তিনি বলেন, কুয়েটের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে সমস্যা নিরসন এবং স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, অবিলম্বে সার্চ কমিটির মাধ্যমে এই দুটি পদে নতুন নিয়োগ দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের-ইউজিসি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা অনশনরত শিক্ষার্থীদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান। ভিসি ও প্রো-ভিসির অব্যাহতির পর পরই কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল বের করেন।
গেলো ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের প্রচারপত্র বিলিকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষাথীদের সঙ্গে বহিরাগতদের সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আহত হন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ছয়দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে। এমন পরিস্থিতিতে ২৫ ফেব্রুয়ারি অনির্দিষ্টকালের জন্য কুয়েট বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
ঈদের ছুটির পর গত ১৩ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। ১৪ এপ্রিল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ৪ মে ক্লাস শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে।
শিক্ষার্থীরা এটি প্রত্যাখান করে ১৫ এপ্রিল আবাসিক হলের তালা ভেঙ্গে হলে প্রবেশ করেন। পরে ভিসির অপসারণের দাবিতে একদফা নিয়ে আন্দোলনে নামে তারা। ২২ এপ্রিল দুপুর ৩টা থেকে আমরন অনশন শুরু করে ৩৩ জন শিক্ষার্থী।
কুয়েট ভিসি ও প্রো-ভিসিকে অব্যাহতি, বিকেলে শিক্ষার্থীদের বিজয় মিছিল
কুয়েট শিক্ষার্থীদের আনন্দ মিছিলে হামলা