বাংলা নাটকের দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী অভিষেক হতে যাচ্ছেন বড় পর্দায়। মুক্তির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে তার অভিনিত সিনেমা ‘প্রিয় মালতী’। আর সেই সিনেমার প্রচার নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় কাটছে অভিনেত্রীর।
সম্প্রতি ‘প্রিয় মালতী’ সিনেমার প্রচারণায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) যান তিনি। সেখানে সোহাগী জাহান তনুর গ্রাফিতির ওপরে নিজ হাতে পোস্টার লাগিয়ে বিতর্কের জালে আটকে যান এই সফল অভিনেত্রী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ২০১৬ সালে ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগী জাহান তনুর গ্রাফিতির ওপর পোস্টার সাটিয়ে দিচ্ছেন মেহজাবীন। এছাড়াও দেয়ালে জুলাই আন্দোলনের গ্রাফিতির ওপরও ‘প্রিয় মালতী’র পোস্টার লাগাতে দেখা যায় অভিনেত্রী ও তার দলকে।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। তার মতো একজন তারকা কীভাবে তনু কিংবা জুলাই আন্দোলনের গ্রাফিতির ওপর নিজের পোস্টার লাগিয়ে সিনেমার প্রচারণা করেন? সেই প্রশ্ন তুলেন নেটিজেনরা।
ঘটনার জের ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রিফাত রশীদ এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে মেহজাবীনকে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলে তিনি লেখেন, ‘আমার শহীদ বোন তনুকে চেনেন না মেহজাবীন? কার গ্রাফিতির উপর নিজের খোমাওয়ালা পোস্টার লাগাইছেন? চিনবেন কেমনে? আপনাগো সো কল্ড কাল-চারাল পাড়ায় আমার বোনেরে নিয়ে কথা হয় কি?’
এরপরই এই সমন্বয়ক ঘোষণা দেন, ‘টিএসসিতে আমরা এই পোস্টার ছিড়বো না মেহজাবীন চৌধুরী। আপনি নিজে এসে এই পোস্টার ছিঁড়বেন।’
তার এই ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় টিএসসিতে সশরীরে উপস্থিত থেকে ডাসের দেয়ালে গ্রাফিতির ওপর নিজ হাতে সাঁটিয়ে দেওয়া ‘প্রিয় মালতী’ সিনেমার পোস্টার তুলে ফেলেন মেহজাবীন। এরপর রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে সবার কাছে ক্ষমা চান তিনি।

ফেসবুক পোস্টে মেহজাবীন চৌধুরী লেখেন, ‘প্রিয় মালতী’ চলচ্চিত্রের প্রচারণার জন্য একটি টিম আজ (১৮ ডিসেম্বর) টিএসসিতে গিয়েছিলাম। অনেক দর্শক আমাদের সঙ্গে যোগ দেন চলচ্চিত্রের প্রচারণায়, প্রচণ্ড ভিড় ও অনিবার্যকারণবশত পোস্টারিংয়ের ক্যাম্পেইনটি দ্রুত শেষ করতে হয়। ভুলবশত ও অনাকাঙ্ক্ষিত অব্যস্থাপনায় একটি পোস্টার মরহুমা সোহাগী জাহান তনুর গ্রাফিতির ওপরে লাগানো হয়ে যায়। আমরা সবাই জানি তনুর মর্মান্তিক ঘটনা এবং তার হত্যার ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই এখনো চলমান।’
তিনি লেখেন, ‘পোস্টারিং সংক্রান্ত যা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত ভুল ছিল। আমরা তৎক্ষণাৎ সেই পোস্টারগুলো সরিয়ে ফেলেছি এবং দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছি।’
এ অভিনেত্রী লেখেন, ‘আমাদের চলচ্চিত্র, আমরা এবং আমাদের সংগ্রামের মূল লক্ষ্যই ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই। এটি আমাদের হৃদয় থেকে আসে। আমরা আশা করি, আমাদের অনিচ্ছাকৃত অব্যবস্থাপনাটুকু ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ আপনাদের সকল সহযোগিতার জন্য।’
