অভিনয়ে টেলি সামাদের হাতেখড়ি অল্প বয়সেই। আসল নাম আব্দুস সামাদ হলেও তাকে এদেশের মানুষ চেনেন টেলি সামাদ নামেই। মঞ্চনাটক করতেন টেলি সামাদ। মঞ্চের এই তুখোড় অভিনেতাকে টেলিভিশনে নিয়ে আসে মঞ্চের সামনে থাকা দর্শকদের করতালির শব্দ। সেখানে নতুন নাম জুড়ে যায় তার। আবদুস সামাদ হয়ে যান টেলি সামাদ।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান মোস্তফা মামুন তার ডাক নাম দিয়েছিলেন টেলি সামাদ। তারপর থেকে তিনি এ নামেই পরিচিত হন। নামের বিষয়টি তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘একদিন বিটিভির অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিত হই।
তখন সেখানে বিটিভির ক্যামেরাম্যান মোস্তফা মামুন বলেন, ‘সামাদ শুন, আজ থেকে তোর নাম টেলি সামাদ। সেই থেকেই আমি আবদুস সামাদ থেকে হয়ে গেলাম টেলি সামাদ।’
পড়াশোনা করেছেন চিত্রকলা বিষয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে তিনি মাস্টার্স করেছেন। তিনিও জানতেন না পড়াশোনা করছেন এক বিষয়ে আর নিজের প্রতিভা প্রকাশ হবে অন্য বিষয়ে।
নজরুল ইসলাম পরিচালিত ১৯৬৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কার বউ’ সিনেমাতে অভিনয় করেন টেলি সামাদ। এই ছবি নিয়ে তেমন আলোচনা ছিল না। এরপর বিখ্যাত পরিচালক আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘নয়নমনি’ ছবিতে অভিনয় করেন, ছবিটি ১৯৭৬ সালে মুক্তি পায় এবং ছবিটি হিট হয় এবং টেলি সামাদ রাতারাতি চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিসহ সারা দেশে পরিচিতি লাভ করেন। এরপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
এই অভিনেতা প্রায় ৬০০ টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। তিনি কণ্ঠশিল্পী হিসেবে প্রায় ৫০ টি ছবিতে গান গেয়েছেন। এছাড়াও ‘মনা পাগলা’ ছবির প্রযোজক ছিলেন টেলি সামাদ। ছবিটি পরিচালনা করেন কাজী হায়াৎ। পরে এই ছবির নায়িকাকে বিয়ে করে সংসার পেতেছেন টেলি সামাদ। তাদের ঘরে এক ছেলে দুই মেয়ে আছে।
কার বউ, নয়নমনি, সুজন সখি, মনা পাগলা, গোলাপী এখন ট্রেনে, নাগর দোলা, ভাত দে, পায়ে চলার পথ, মাটির পুতুল, নতুন বউ, মন বসে না পড়ার টেবিলে, মিস লোলিট্যাব ইত্যাদি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
টেলি সামাদের জন্ম ১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি। ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল দুপুরে অসুস্থতাজনিত কারণে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এই তারকা শিল্পী।
