আলোচিত হিন্দি ওয়েব ফিল্ম ‘সেক্টর ৩৬’-তে নানা প্রতীকী দৃশ্যের মাধ্যমে ভারতীয় সমাজের শ্রেণিবৈষম্য চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন নির্মাতা। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ১২৪ মিনিটের ক্রাইম থ্রিলার ঘরানার ছবিটি নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে। ‘সেক্টর ৩৬’ ছবিটি তৈরি হয়েছে একটি বাস্তব ঘটনার প্রেরণায়। ২০০৬ সালে ভারতের নয়ডায় নিঠারি হত্যাকাণ্ড নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। সে সময় ঘটনাটি নিয়ে গণমাধ্যমে তুমুল চর্চা হয়।
২০১২ সালে ঘটনাটি নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র ‘স্লামডগ ক্যানিবাল’ তৈরি হয়। একই ঘটনা নিয়ে তথ্যচিত্র বানায় নেটফ্লিক্স, ‘দ্য কর্মা কিলিংস’ নামে তথ্যচিত্রটি মুক্তি পায় ২০১৭ সালে। ২০১১ সালে নির্মিত হিন্দি সিনেমা ‘মার্ডার ২’ও তৈরি হয়েছিল একই ঘটনার প্রেরণায়। এবার এল ‘সেক্টর ৩৬’। এত চর্চিত ঘটনা নিয়ে নির্মিত হওয়ার পরও কেন সিনেমাটি আলোচনায়? সমালোচকেরা কেন মনে করছেন, এটি চলতি বছরের অন্যতম সেরা হিন্দি সিনেমা?
‘সেক্টর ৩৬’ সিনেমায় সবাই নায়ক, সবাই খলনায়ক। এ সিনেমায় পুরোপুরি সাদা কোনো চরিত্র নেই। কেউ খুব খারাপ, কেউ আবার ধূসর। যাকে শুরু থেকে আপনার ভালো মনে হবে, সে–ই হয়তো হাজির হবে চরিত্রের একটা দিক নিয়ে। তবে এ ছবিতে যা আছে তা হলো, শ্রেণিবৈষম্যের সামাজিক ব্যবস্থাকে ‘থাপ্পড়’। ‘সেক্টর ৩৬’ এক সিরিয়াল কিলার বা ক্রমিক খুনির গল্প, এটা সবার জানা। এই খুনি একদিকে শিশুদের তার লালসার শিকার বানায়, তো আরেক দিকে সে নরখাদকও। এই খুনি ধনী-গরিব বাছে না; সবাইকেই মারে। কিন্তু পুলিশের টনক নড়ে উচ্চবিত্ত বা প্রভাবশালী কোনো ব্যক্তির সন্তানকে অপহরণের চেষ্টার পর।
ছবিতে সহিংসতা আছে, তার চেয়ে বেশি আছে প্রচণ্ড মানসিক চাপ; যা দেখতে অনেকেরই অস্বস্তি হতে পারে। বিশেষ করে, যেভাবে ক্যামেরা চলেছে পুরো সিনেমায়, তা ছবিকে আরও বেশি ভয়ংকর করে তোলে। বাস্তব ঘটনাকেই যেন চোখের সামনে ভয়াবহভাবে তুলে ধরেছেন পরিচালক আদিত্য। চিত্রনাট্যের সঙ্গে একেবারে মিলেমিশে যায় চিত্রায়ন।এই ছবি প্রথম থেকেই থমথমে। টান টান চিত্রনাট্য এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যা কখনো ঢিলা হয়ে যায় না। বরং প্রতিটি ফ্রেম যেন একেকটা গল্পের দলিল।
