নারীর প্রতি সহিংসতা, যৌন হয়রানি, নির্যাতন এবং ধর্ষণ সামাজিক ব্যাধি। সাম্প্রতিককালে যৌন হয়রানি, নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে যা সত্যিই দেশের জন্য অশুভ বার্তা বহন করে। দেশজুড়ে ধর্ষকদের শাস্তি নিয়ে আওয়াজ তুলছে মানুষ। আইনি ব্যবস্থা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠছে দেশে ধর্ষকদের শাস্তির বিধান কী? এর বাইরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ধর্ষণের মতো অপরাধের শাস্তির বিধানগুলোও আলোচনায় আসছে। কেউ কেউ আইন সংশোধনের কথাও বলছেন।

বাংলাদেশ: বাংলাদেশে বিদ্যমান আইনে ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর এ আইন পাস করা হয়।
সৌদি আরব : সৌদি আরবে ধর্ষণের শাস্তি ইসলামী শরিয়াহ আইনের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। সাধারণত অপরাধ প্রমাণিত হলে শিরচ্ছেদ (শিরোচ্ছেদ) করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে শরিয়াহ আইন অনুসরণ করা হয়, যেখানে দোষী সাব্যস্ত হলে পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
ইরান : ইরানে ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ফাঁসিতে ঝোলানো এবং কখনও কখনও পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র : বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন শাস্তির বিধান রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণের শাস্তি নির্ভর করে অপরাধের ধরন ও রাজ্যভেদে আইন অনুযায়ী। সাধারণত ৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে।
রাশিয়া : রাশিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি কঠোর। দোষী সাব্যস্ত হলে ২০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
চীন: চীনে ধর্ষণের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর। যদি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মেডিক্যাল পরীক্ষায় প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে কোনো দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড বা আজীবনের জন্য নপুংসক (castration) করে দেওয়া হয়।
আফগানিস্তান : আফগানিস্তানে ধর্ষণের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জনসমক্ষে গুলি করে হত্যা করা হয়।
উত্তর কোরিয়া : উত্তর কোরিয়ায় ধর্ষণের অপরাধে দোষী প্রমাণিত হলে ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মালয়েশিয়া : মালয়েশিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর। এখানে ধর্ষণের দোষী সাব্যস্ত হলে সরাসরি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
ভারত : ২০১৮ সালে পাস হওয়া এক নির্বাহী আদেশে ভারতে ১২ বছরের কম বয়সী মেয়েকে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হয়। এছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে ধর্ষণ প্রমাণিত হলে ন্যূনতম ১০ বছর শাস্তির বিধান রয়েছে।
মিশর : মিশরে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ফাঁসিতে ঝোলানোর বিধান রয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৯৪৯টি, ২০১৯ সালে ৫ হাজার ৮৭২টি, ২০২০ সালে ৬ হাজার ৫৫৫টি ও ২০২১ সালে ৬ হাজার ৩৪১টি ধর্ষণের মামলা করা হয়েছে। গত পাঁচ বছরে রাজধানী ঢাকায় ৩ হাজার ৪২টি ধর্ষণের মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক নারী ২ হাজার ৪৭০ জন এবং শিশু ৫৭২ জন। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ধর্ষণ মামলা হয়েছে ৫২৩টি। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক নারী ৪৩০ জন এবং শিশু ৯৩ জন।
নারীর জন্য নিরাপদ রাষ্ট্র চেয়ে ববিতে বিক্ষোভ
কেরানীগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বাকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, ঢামেকে ভর্তি