মিরপুর চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের জন্য বন্য পরিবেশ তৈরি করা হবে। জাতীয় এ চিড়িয়াখানাকে আন্তর্জাতিক আদলে গড়ে প্রাণীদের বিচরণের জন্য খাঁচার বদলে থাকবে বন্য পরিবেশ। ঘন গাছপালার পাশাপাশি জলজ প্রাণীর জন্য থাকবে হ্রদ।
চিড়িয়াখানার আধুনিকায়নের জন্য দুটি আলাদা প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানা ও রংপুর চিড়িয়াখানার জন্য আলাদা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। নতুন করে হবে দরপত্র।
১৮৬ একর জায়াগা নিয়ে মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানা। এখানে রয়েছে প্রায় তিন হাজার প্রাণী। অল্প জায়গা ও মান্ধাতা আমলের খাঁচা প্রাণীদের জন্য অস্বাস্থ্যকর। সেইসঙ্গে প্রাণী লালন-পালন আধুনিকায়ন না হওয়ায় এই চিড়িয়াখানা আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াজার সনদ পায়নি।

আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সিঙ্গাপুরের চিড়িয়াখানার আদলে মিরপুর চিড়িয়াখানাকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। ২০১৫ সাল থেকে কয়েক দফায় আধুনিকায়নের মহাপরিকল্পনা তৈরি করা হয়। সবশেষ ২০২১ সালে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরে একটি মাস্টাপ্ল্যান হয়। যা ২০২২ সাল থেকে বাস্তবায়নের কথা ছিল।
৩ বছর পর আবারও নতুন করে আরও একটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে এবার ঢাকা ও রংপুরের জন্য পৃথক দুইটি মাস্টারপ্ল্যান থাকছে।

জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, মাস্টারপ্ল্যানের বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে রিভিশন হয়েছে। রিভিশনের একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, এটা একটি প্রকল্প নয় বরং বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার জন্য একটি প্রকল্প এবং রংপুর চিড়িয়াখানার জন্য আলাদা একটি প্রকল্প হবে। দুটি আলাদা প্রকল্পের মাধ্যমে এই দুই চিড়িয়াখানাকে আধুনিকায়ন করা হবে। সেভাবেই ডিপিপি সাজানোর কাজ চলছে।
প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দেড় হাজার কোটি টাকার মতো হতে পারে বলে জানান জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক।

রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, চিড়িয়াখানাগুলো আলাদা ব্যবস্থাপনার আওতায় থাকবে। যার কারণে খুব দ্রুতই এই প্রকল্প দুটি শেষ করা যাবে। এক্ষেত্রে নতুন করে পরামর্শক নিয়োগের বিষয়টি আসবে। সেক্ষেত্রে বর্তমান প্রতিষ্ঠানই পরামর্শক হিসেবে থাকবে, নাকি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান আসবে সেটি প্রকল্প আসলে নির্ধারণ হবে। কারণ, নতুন করে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে এটি নির্ধারণ হবে।
১৯৯১ সালে রংপুর নগরীর হনুমানতলায় ২২ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় রংপুর চিড়িয়াখানা। ছুটির দিন কিংবা অবসর সময়ে রংপুর চিড়িয়াখানায় ভিড় করতেন দর্শণার্থীরা। এক সময় ৩০ প্রজাতির প্রাণী ও পশুপাখি থাকলেও বর্তমানে খাঁচাগুলো খালি পড়ে আছে। এতে সহজেই বোঝা যায় চিড়িয়াখানার সেই সোনালী অতীত আর নেই।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, অর্থ বরাদ্দ শুরু হলেই রংপুর চিড়িয়াখানার চালচিত্র বদলে যাবে।
