বিপন্ন কচ্ছপসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের বেওয়ারিশ তিন হাজার কুকুরকে বন্ধ্যাকরণ টিকা দেবে পরিবেশ অধিদপ্তর। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ‘অভয়ারণ্য’।
ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, দ্বীপে লোকসংখ্যা ১০ হাজার ৭০০। কুকুর আছে সাত হাজারেরও বেশি।
পরিবেশবিদের মতে, কুকুরের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে চলায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে দ্বীপে ডিম পাড়তে আসা কচ্ছপও কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। এ ছাড়া কোনো একটি প্রজাতির অনিয়ন্ত্রিত বংশবৃদ্ধিও প্রাকৃতিক খাদ্যচক্রের জন্য হুমকি বলে মনে করেন।
দ্বীপের কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে বন্ধ্যাকরণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। পরিবেশ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে কুকুর বন্ধ্যাকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি সংস্থা ‘অভয়ারণ্য’।
অভয়ারণ্যের চেয়ারম্যান রুবাইয়া আহমদ বলেন, কুকুর স্থানান্তর কিংবা নিধন করা আইনিভাবে নিষিদ্ধ। এখন কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বন্ধ্যাকরণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার।
তিনি বলেন, প্রথমে তিন হাজার কুকুরকে বন্ধ্যা করা হবে। কর্মসূচি কত দিন চালানো যাবে, তা নির্ভর করছে পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর। প্রথম ধাপে আমরা এক হাজার কুকুরকে বন্ধ্যাকরণ করব। এরপর আরও কয়েক ধাপে দুই হাজার কুকুরকে বন্ধ্যাকরণ করা হবে। পাশাপাশি কুকুর লালন পালন, সরকারি আইন এবং বন্ধ্যাকরণ বিষয়ে স্থানীয় লোকজনকে সচেতন করা হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপপরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, বন্ধ্যাকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড ভেটেরিনারি সার্ভিস (ডব্লিউভিএস)।’
তিনি বলেন, ২০১২ সাল থেকে রাজধানী ঢাকায়ও কুকুর বন্ধ্যাকরণের কাজে যুক্ত রয়েছে অভয়ারণ্য। গত জানুয়ারি মাসে সেন্টমার্টিনে গিয়ে কুকুর জরিপ করেন অভয়ারণ্যের কর্মীরা। তারা দ্বীপের উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়া, মাঝরপাড়া, পশ্চিমপাড়াসহ কয়েকটির গ্রামের ২০০ ঘরে গিয়ে কুকুরের জরিপ পরিচালনা করেন।
জরিপ অনুযায়ী, ৩০ শতাংশ পরিবারে কুকুর রয়েছে। অবশিষ্ট ৭০ শতাংশ বেওয়ারিশ কুকুর। তবে কোনো কুকুরের বন্ধ্যাকরণ হয়নি।
