ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

গোপালগঞ্জে দাবদাহে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা

আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৪ পিএম

গোপালগঞ্জের তাপমাত্রা আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে দাবদাহ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গোপালগঞ্জের তাপমাত্রা ছিলো ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে বিরাজমান প্রচণ্ড দাবদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। অব্যাহত দাবদাহের কারণে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন-আয়ের মানুষ। বিশেষ করে রিকশাচালক, দিনমজুর, বিভিন্ন কলকারখানার শ্রমিক, ফেরিওয়ালাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের জনজীবনে অস্থিরতা নেমে এসেছে। 

এদিকে, গোপালগঞ্জে তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার চলতি মৌসুমে গোপালগঞ্জের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও রোববার ৪০ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান। 

অপরদিকে, গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন মো, জিল্লুর রহমান দৈনিক খবর সংযোগ -কে জানিয়েছেন, গত কয়েকদিনের প্রচণ্ড গরমে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে প্রতিদিন প্রচুর রোগী ভর্তি হচ্ছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। তবে, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতেও বাড়ছে সব বয়সী রোগীর সংখ্যা। 

সিভিল সার্জন আরও বলেন, অধিকাংশ বয়স্ক মানুষগুলো হিট স্ট্রোক এবং পানিশূণ্যতায় ভুগে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অপরদিকে, গোপালগঞ্জ আড়াইশ' শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডগুলো রোগীতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হওয়ায়, রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে হাসপাতালের বারান্দাসহ নানা জায়গায়। 

জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মো. আফতাব জিলানি দৈনিক খবর সংযোগ -কে বলেন, প্রতিদিন দাবদাহের কারণে প্রচুর রোগী ভর্তি হচ্ছে। রোগী এতোই বেশি যে রেজিস্ট্রার খাতা না দেখে সঠিক সংখ্যা বলা সম্ভব নয়। 

এ রমধ্যে বয়স্ক রোগী ছাড়াও ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বলে দাবী করেন তিনি।

গোপালগঞ্জ ২৫০ সরকার বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: আহমাদুল কবির দৈনিক খবর সংযোগ -কে বলেন, গোপালগঞ্জের অধিকাংশ মানুষ শ্রমিক এবং কৃষক। বর্তমানে ধানের সিজনে কৃষকরা জমিতে চাষাবাদের কাজে ব্যস্ত থাকেন। এজন্য হিট স্ট্রোক হবার আশঙ্কা বেশি থাকে। নিম্ন আয়ের মানুষ বেশি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, এটা উদ্বেগ জনক। 

তীব্র দাবদাহ থেকে নিজেকে বাঁচাতে প্রচুর পরিমাণে পানি পানের পরামর্শ দেন তিনি। 

সিভিল সার্জন মো, জিল্লুর রহমান আরও বলেন, ভিটামিন সি যুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে, তীব্র দাবদাহের কারণে শরীর থেকে প্রচুর ঘাম বের হয়। এর সাথে শরীরের প্রয়োজনীয় লবণ বের হয়ে আসে। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে স্যালাইন খাওয়া যেতে পারে। দাবদাহ থেকে বাঁচতে মাঝেমধ্যে রুমাল অথবা তোয়ালে ভিজিয়ে শরীর মুছে নিতে হবে। 

তিনি বলেন, অবশ্যই তেলে ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করতে হবে। গরমে খাবার খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তাই বাসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। গরম থেকে প্রশান্তির জন্য অনেকে রাস্তার পাশের ভ্রাম্যমান দোকান থেকে শরবত এবং আখের রস পান করেন সেটাও স্বাস্থ্যের ঝুঁকিপূর্ণ। কেননা এ সমস্ত শরবতে বিভিন্ন কালার এবং অপরিশোধিত পানি/বরফ ব্যবহার করা হয়। এটা পান করলে ডায়রিয়া হবার আশঙ্কা থাকে। 

এই সময়টা বিশেষ করে শিশুদের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা একান্ত প্রয়োজন। বিশেষ করে বেলা ১১ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত তাদের বাইরে খেলাধুলা থেকে বিরত রেখে ঘরে অথবা শীতল স্থানে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। 

 

HK/AST
আরও পড়ুন