আগামী বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে ইচ্ছুকদের নিবন্ধনে সাড়া মিলছে খুবই কম। দ্বিতীয় দফায় সময় বাড়ানোর পর নিবন্ধন করেছেন মাত্র ১৮ হাজার ৩২০ জন হজযাত্রী। আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের (হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টাল) দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন মাত্র ২ হাজার ৩৬৩ জন। আর বেসরকারি ব্যবস্থায় হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন ১৬ হাজার ৫১৫ জন। গত ১৫ নভেম্বর থেকে নিবন্ধন শুরু হওয়ার পর ৩৭ দিনে হজে যাওয়া নিশ্চিত করেছেন মাত্র ১৮ হাজার ৮৭৮ জন হজযাত্রী।
চলতি বছর ১৫ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত হজযাত্রীদের নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। পরে প্রত্যাশিত হজযাত্রীর সাড়া না পাওয়ায় দ্বিতীয় ধাপে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়।
জানা যায়, হজ প্যাকেজের খরচ বেশি হওয়ায় গত বছরও হজযাত্রীদের সাড়া মেলেনি। এতে দফায় দফায় সময় বাড়িয়েও ৫ হাজার আসন খালি ছিল। দেশের চলমান অর্থনৈতিক মন্দার কারণে অনেক হজযাত্রী প্রাকনিবন্ধন করেও হজে যেতে পারছেন না। এবার সরকারিভাবে হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ হবে। বিশেষ হজ প্যাকেজে খরচ ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা।
অপরদিকে গত ১৪ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। প্রথম প্যাকেজের (সাধারণ) খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা। বিশেষ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ টাকা।
হজ এজেন্সির মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হওয়া ও হজের প্যাকেজের মূল্য বৃদ্ধির কারণেই মানুষ হজে যেতে পারছেন না। অনেকেই প্রাক-নিবন্ধন করেছেন, কিন্তু খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে নিবন্ধন করছেন না।
আল ওয়াসি হজ গ্রুপের পরিচালক মাওলানা আব্দুল গফ্ফার খান বলেন, অনেকেই অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে হজের নিবন্ধন করছেন না। তবে সরকার যদি নিবন্ধনের সময় বাড়ায় তাহলে হজযাত্রীর সংখ্যা বাড়বে। অনেক কোটাই খালি থাকবে বলে আশঙ্কা হচ্ছে।
হজে যেতে ইচ্ছুক মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা গত বছরই সপরিবারে হজে যেতে প্রাক-নিবন্ধন করেছিলাম। কিন্তু হজ প্যাকেজ বেশি হওয়ায় যেতে পারিনি। এ বছরও যাওয়ার ইচ্ছা আছে। কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও যেভাবে প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে এ বছরও যেতে পারব কিনা আল্লাহ জানেন।
কাবার পথে হজ গ্রুপের পরিচালক নুরুজ্জামান বলেন, আশা করছি সরকার নিবন্ধনের সময় আবারও বাড়াবে। কিন্তু হজের খরচ বেড়ে যাওয়ায় হজে যেতে ইচ্ছুকরা নিবন্ধন কম করছেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছর ১৬ জুন পবিত্র হজ পালিত হতে পারে। নিবন্ধনের জন্য হজযাত্রীদের পাসপোর্টের মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে হবে।
