ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

লোকালয়ের লোনাজল দ্রুত অপসারণের দাবি বাপার 

আপডেট : ০১ জুন ২০২৪, ০৭:০৫ পিএম

ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে যেসব উপকূলীয় অঞ্চলে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে লোনাজল প্রবেশ করেছে তা দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-(বাপা)। 

শনিবার (১জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে "ঘূর্ণিঝড় রিমাল পরবর্তী খাদ্য নিরাপত্তা: আশু করণীয়"-শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে মূল গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপা জাতীয় কমিটির সদস্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ গওহার নঈম ওয়ারা। 

গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, এবারের সাইক্লোনে বেড়িবাঁধের ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতের সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। খুলনা অঞ্চলের তিন জেলায় ৬১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু এলাকায় পুরোপুরি এবং কিছু এলাকায় বাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বাঁধসংলগ্ন নিচু এলাকা উপচে লোকালয়ে লোনা পানি প্রবেশ করেছে। শত শত গ্রামে চিংড়ির ঘেরসহ ফসলি জমিতে লোনা পানি প্রবেশ করেছে। আমন মওসুম ধরতে হলে মাঠ থেকে, জলাশয় থেকে দ্রুত লোনাজল বের করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি বলেন, পাম্প করে এই পানি বের করার ব্যবস্থা করা যায়। ১৯৯১ সালে সাইক্লোন এবং ২০০৭ সালের সিডরের পর এটা করা হয়েছিল।

গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, বরিশাল অঞ্চলে কমপক্ষে ৪০০ জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেড়িবাঁধ। নোয়াখালি এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে বহু স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে লোনাজল ঢুকে মিষ্টিজলের আধারগুলি নষ্ট করে দিয়েছে । অনেক জায়গায় ভাটার টানে পানি বেরিয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। জলখালাসির পদ বিলুপ্তির পর থেকেই দেশের বেশিরভাগ জলকপাট রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কোথাও ভেঙ্গে গেছে, কোথাও দেবে গেছে কপাট। ফলে লোনাপানি থেকে ফসল রক্ষা, পানি ধরে রাখা ও খালের পানির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখার কার্যক্রম অনেকদিন থেকেই ব্যাহত হচ্ছে। জনস্বার্থে করা এ জলকপাট এখন কৃষক ও সাধারণ মানুষের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধগুলি মেরামত করতে হবে। আগামী পূর্ণিমার আগেই এটা করতে হবে। তাছাড়া সেপ্টেম্বরের (ভাদ্র) ভরা কাটালের খড়্গতো ঝুলছেই। জনগণকে সম্পৃক্ত করে জনগণের মালিকানায় বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে বর্তমান নীতি কৌশল পরিবর্তন করে এটা করতে হবে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চরফ্যাশন মডেল নিয়েই এগুতে হবে।

তিনি বলেন, ভেঙ্গে যাওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি মেরামত না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প পদ্ধতিতে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভিআইপিদের চলাচল সীমিত করতে হবে। প্রশাসনকে ত্রাণ কাজে মনোনিবেশ করার চেয়ে প্রটোকলে বেশি সময় দিতে হয়। ফলে ত্রাণ কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। ত্রাণের ফটোসেশন মানবাধিকারের সাথে যায় না। এটা পরিহার বাঞ্ছনীয়।

তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ শিশুদের প্রতি বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। শিশু সুরক্ষাকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিশু খাদ্যের নামে টিনজাত খাদ্য বিতরণ করা যাবে না। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে প্যারাফিনজাত মোমবাতি বিতরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। বেশিরভাগ ঘরবাড়ি পতিত গাছের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিদেশি গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে।

বাপা সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন রফিকুল আলম, অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ।

RY/AST
আরও পড়ুন