সেলিনা খান মজলিস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে ঝুলে ছিলো এ হত্যার রহস্য। ২০১১ সালের ১৪ জুন সেলিনা খান মজলিশকে হত্যা করা হয়।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সে আয়োজিত সাভারের সাবেক এমপি শামছুদ্দোহা খানের স্ত্রী সেলিনা খানের হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানান, দীর্ঘদিন সম্পর্কের জেরে মাঝে মধ্যেই সাবেক সাংসদ শামছুদ্দোহা খান মজলিসের বাড়িতে যাতায়াত করতেন আসামি সুবল কুমার রায়। যাতায়াতের এক পর্যায়ে ভিকটিম সেলিনা খান মজলিসের বড় মেয়ে শামীমা খান মজলিসের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পরেন আসামি সুবল। ঘটনা জানা জানি হলে ওই বাড়িতে আসামি সুবলের যাতায়াত বন্ধ করে দেন ভিকটিম সেলিনা খান মজলিস।
এরপরেও অভ্যন্তরীণভাবে তাদের যোগাযোগ এবং যাতায়াত চলতে থাকলে মা সেলিনা খান মজলিস দেখে ফেলেন এবং চিৎকার চেঁচামেচি করলে মাকে থামাতে ছুরিকাঘাত করেন মেয়ে শামীমা খান মজলিস। ছুরিকাঘাতের পর মা জীবিত থাকলেও মৃত্যু নিশ্চিত করতে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি সুফলের সহায়তায় মাথায় ইলেকট্রিক শকের মাধ্যমে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
বনজ কুমার মজুমদার বলেন, এ ঘটনায় মামলা হলে প্রথমে মামলাটি সাভার থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরে তদন্তের দায়িত্ব দেয় হয় সিআইডিকে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার কুলকিনার করতে না পারেনি সংস্থাটি। ঘটনার ১৩ বছর পর ২০২৪ সালে হত্যার জট খুলতে মামলা হস্তান্তর করা হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে। এ ঘটনায় গত ৩০ মে সাভার থেকে পিবিআই গ্রেপ্তার করে হত্যাকারী সুবল কুমার রায়কে। এরপর ভিকটিমের নিজ কন্যা শামীমা খান মজলিস ওরপে পপি (৫৭) ও গৃহকর্মী আরতি সরকারকে (৬০) সাভার থানাধীন ভাগলপুর এবং পাকিজা এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়।
বনজ কুমার মজুমদার আরও বলেন, দীর্ঘদিন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন না হলে একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায় মামলার তদন্ত কাজ। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মামলা পুনরায় পুনর্জীবিত করতে নির্দেশনা আসে। আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করি। কিন্তু আমরা তদন্তকালে যেসব কথা জানতে পারি তার মধ্যে সুইচ বোর্ডটি ভাঙা এবং দুইটা তার বের করে রাখার বিষয়টি উঠে আসছিল। এরপর আমরা আসামি ইলেকট্রিশিয়ান সুবল কুমার রায় (৫০) কে নিয়ে আসি।
আমাদের প্রাক্তন সাংসদ খান মজলিস তাকে পছন্দ করতেন তাই আসামি সুবল কুমার রায় মাঝেমধ্যে সেখানে যাতায়াত করতেন এবং বাড়ির ইলেকট্রিকের কাজ করে দিতাম। ১৯৯৮ সাল থেকে সুবল কুমার রায় প্রাক্তন সাংসদের বাড়িতে যাতায়াত করতেন।
