বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এক সংকটময় পরিস্থিতিতে উপনীত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের আলোচনা সামনে আসায় এ সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়েই অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।
কিন্তু অধ্যাপক ইউনূসকে কেন পদত্যাগের চিন্তা করতে হচ্ছে, সক্রিয় সব রাজনৈতিক দলের সমর্থনে গঠিত এই সরকারকে কেন এমন সংকটে পড়তে হলো-এসব প্রশ্ন এখন সব মহলে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।
এ ঘটনা এমন সময়ে ঘটছে যখন বিএনপি রাজপথে কর্মসূচি রেখেছে এবং এ সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন আর অব্যাহত না রাখার ইঙ্গিতও দিচ্ছে।
অন্যদিকে, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গত বুধবার বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে এক বৈঠকে নির্বাচন, রাখাইনের জন্য মানবিক করিডর প্রসঙ্গ এবং মব বা দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির বিষয়সহ সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন। যা সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশ হয়েছে।
এমন এক পটভূমিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বৃহস্পতিবার (২২ মে) অন্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে এক অনির্ধারিত বৈঠকে তার পদত্যাগের ভাবনার কথা বলেছেন। সে ক্ষেত্রে নানা পক্ষের প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর অসহযোগিতায় তার সরকার কাজ করতে পারছে না বলে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূসের এমন ভাবনার কথা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। নাহিদ ইসলামের মাধ্যমেই প্রধান উপদেষ্টার এই ভাবনার কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলো পরিস্থিতিটাকে নানাভাবে বিশ্লেষণ করছে। বিএনপি বলছে, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ও তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগের তাদের দাবি এড়াতে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের ভাবনার কথা সামনে আনা হয়েছে।
দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘দেশ পরিচালনা করতে গিয়ে আবেগ সৃষ্টি করার কিছু নেই।’
বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের নেতারা এ-ও বলছেন, সরকারের দূর্বলতার কারণে পরিস্থিতি সামলাতে যখন ব্যর্থতার প্রশ্ন আসছে, তখন পদত্যাগের এই ভাবনার কথা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি এক ধরনের হুমকি বা সতর্কতা বলে তারা মনে করছেন।
এখন অন্তর্বর্তী সরকারের এই সংকট সামলাতে জামায়াতে ইসলামী সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার পরামর্শও দিয়েছে।
তবে পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের পক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য এখনো দেওয়া হয়নি।
সূত্র: বিবিসি বাংলা।