ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

আহতদের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দেওয়া চিকিৎসকরা ‘জুলাইয়ের নায়ক’: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যুদ্ধের সময়ও আহতদের চিকিৎসা বন্ধ হয় না- এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। অথচ জুলাই বিপ্লবের দিনগুলোতে বাংলাদেশে ঘটেছে তার ব্যতিক্রম। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে চিকিৎসকদের ওপর হামলা ও হুমকি চলেছে। তারপরও যারা ঝুঁকি নিয়ে আহতদের চিকিৎসা দিয়েছেন, তারাই জুলাইয়ের সত্যিকারের নায়ক।

সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে আহত আন্দোলনকারীদের সেবা দেওয়া চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্মানে আয়োজিত ‘জুলাই স্মরণ’ অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জুলাই বিপ্লবে চিকিৎসকদের মানবিক অবদানের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আন্দোলনের সময় আহতদের চিকিৎসা না দেওয়ার সুস্পষ্ট নির্দেশ ছিল কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই বাঁধা ভেঙে আহতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন কিছু চিকিৎসক। আপনারা এই জুলাইয়ের অন্যতম নায়ক। আপনারা এই জুলাইয়ের সাহস এবং দায়িত্ববোধের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। এই দুঃসময়ে আপনারা যে সেবা দিয়েছেন তা আমরা কোনোদিন ভুলবো না।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার এ দেশের ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালিয়েই ক্ষান্ত থাকেনি, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে যেন কোনো হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা না হয়। কিন্তু জুলাইয়ে আমাদের কিছু চিকিৎসক যোদ্ধাদের গল্প যুদ্ধক্ষেত্রে আহতদের সেবার গল্পকেও হার মানায়।

তিনি জানান, ছাত্রদের রাস্তায় পিটিয়ে আহত করার পর মেডিক্যালেও তাদের ওপর হামলা হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সদের ওপর নানা ধরনের হুমকি-ধামকি এসেছে, এমনকি তাদের চিকিৎসা কার্যক্রমেও বাধা দেওয়া হয়েছে। শত শত ছেলে-মেয়ে অন্ধত্ববরণ করেছে, যারা সঠিক সময়ে চিকিৎসা পায়নি। নির্দেশ ছিল, আন্দোলনে আহতদের কাউকে চিকিৎসা দেওয়া যাবে না।

এই প্রেক্ষাপটেও যেসব চিকিৎসক আহতদের চিকিৎসা দিয়েছেন, তাদের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, আপনারা নিজেরা যেমন ঝুঁকির মধ্যে ছিলেন, তেমনি আপনাদের পরিবারগুলোও এক ধরনের আতঙ্ক ও ঝুঁকির মধ্যে ছিল। তবুও পাহাড়সম বাধা অতিক্রম করে মানুষের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন।

তিনি আরও বলেন, আহতদের জন্য রক্ত সংকট থাকলেও চিকিৎসকরা প্রশাসনের নজর এড়িয়ে রক্ত সংগ্রহ করেছেন, ওষুধ সরবরাহ করেছেন, এমনকি রোগীর পরিচয় গোপন রাখতে ব্যবস্থাপত্রে অন্য নাম ও রোগ লিখে পুলিশের কাছ থেকে আড়াল করেছেন। অনেক প্রাইভেট চিকিৎসক নিজ উদ্যোগে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। আপনারা শুধু সেবা দেননি, দায়িত্ববোধ ও মানবিকতার নতুন এক অধ্যায় রচনা করেছেন।

MMS
আরও পড়ুন