ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বাংলাদেশ-মেক্সিকো কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন

আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৫, ১২:৫২ এএম

মেক্সিকো সিটির ঐতিহাসিক মিউজিয়াম অব মিউরালিজমে বাংলাদেশ দূতাবাস বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) এক বর্ণাঢ্য কূটনৈতিক সংবর্ধনা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী নীরবতা ভাঙার ছবির আয়োজনে ক‌রে। এই আয়োজন বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকীকে স্মরণীয় করে তুলেছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মেক্সিকোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ফার্নান্দো গনসালেস সাইফে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতি ও সহযোগিতা বিভাগের মহাপরিচালক গ্রাসিয়েলা বায়েজ রিকারদেজ, এবং মিউজিয়াম অব মিউরালিজমের পরিচালক গ্লোরিয়া ফালকন। 

এছাড়াও অনুষ্ঠানে অংশ নেয় অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান, ভারত, চীন, রাশিয়া, সৌদি আরব, জর্ডান, কুয়েত, আয়ারল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, কোস্টারিকা, কিউবা, কাজাখস্তান, পর্তুগালসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকবৃন্দ, মেক্সিকো সরকারের কর্মকর্তারা, অ্যাকাডেমিকস, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের প্রতিনিধিদল এবং মেক্সিকো প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি।

উদ্বোধনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, ‘৫০ বছর আগে বাংলাদেশ ও মেক্সিকো প্রথমবারের মতো কূটনৈতিক অংশীদার হিসেবে হাত মিলিয়েছিল। সেই করমর্দন ছিল নিছক আনুষ্ঠানিকতা নয়, সেটি ছিল এক অঙ্গীকার, মহাসাগর পেরিয়ে বন্ধুত্বের সেতুবন্ধন।’ 

তিনি বলেন, ‘আজ অর্ধশতাব্দী পর আমরা শুধু সময়ের সাক্ষী হতে নয়, বরং বিশ্বাস, দৃঢ়তা ও অভিন্ন স্বপ্নের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা বন্ধুত্বকে উদ্‌যাপন করতে একত্রিত হয়েছি।’

রাষ্ট্রদূত মুশফিক বলেন, ‘বাংলাদেশ ও মেক্সিকো, দুটি দেশ যাদের সংস্কৃতি, রঙ, সুর আর স্বাদের অফুরন্ত ভাণ্ডার। বাংলার মেলা কিংবা মেক্সিকোর ফিয়েস্তা দু’দেশেরই প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর উৎসবমুখরতা। দুঃখ-কষ্ট চিনলেও তারা হার মানে না হাসিতে। আর সংস্কৃতি তাদের কাছে নিছক অলঙ্কার নয়, বরং পরিচয়, আত্মার প্রতীক।’

ফার্নান্দো গনসালেস সাইফে তার বক্তব্যে বলেন, ‘জনগণের মধ্যে সংযোগই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সবচেয়ে শক্তিশালী করে।’ 

তিনি আলোকচিত্র প্রদর্শনীকে সাংস্কৃতিক বোঝাপড়া গভীর করার একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন এবং নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মেক্সিকান শিল্প প্রদর্শনীর প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

গ্রাসিয়েলা বায়েজ রিকারদেজ বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর সাদৃশ্য তুলে ধরে বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের চালিকাশক্তি হলো শিক্ষা ও সংস্কৃতি।’ 

তিনি প্রদর্শনীকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে মেক্সিকোতে তুলে ধরার এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে প্রশংসা করেন।

ড. শহীদুল আলম তার বক্তব্যে বলেন, ‘মেক্সিকোর শিল্পী থেকে সাধারণ দর্শক পর্যন্ত সবাই আন্তরিকভাবে তার কাজকে গ্রহণ করেছেন, যা মেক্সিকান সংস্কৃতির উন্মুক্ততা ও প্রাণবন্ততার প্রতিফলন।’ 

তিনি মেক্সিকোর বিশিষ্ট আলোকচিত্রী পেদ্রো মেয়ের ও গ্রাসিয়েলা ইটুরবিদের বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে বলেন, এই শিল্প বিনিময় প্রমাণ করে ভৌগোলিক দূরত্ব ও ভাষার ভিন্নতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও মেক্সিকো সৃজনশীলতা, সংহতি এবং মানবিকতার অভিন্ন চেতনায় যুক্ত।

অনুষ্ঠানটি ছিল ড. শহীদুল আলমের শক্তিশালী আলোকচিত্রকর্মের প্রতি এক অনন্য শ্রদ্ধা নিবেদন। রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী ও ড. আলম স্বয়ং অতিথিদের প্রদর্শনী ঘুরে দেখান এবং ছবিগুলোর পেছনের গল্প তুলে ধরেন। প্রদর্শনীটি চলবে ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত। মেক্সিকোর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর যৌথ আয়োজক।

HN
আরও পড়ুন