ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ধর্মীয় উৎসব ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:০৭ এএম

বাংলাদেশে সকল ধর্মীয় উৎসব যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে সুদৃঢ় করে— এমন মতামত ব্যক্ত করেছেন দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতা, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদরা। তাদের মতে, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সৌহার্দ্যের মাধ্যমে ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপনই হতে পারে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সহাবস্থানের মূল ভিত্তি।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক ফাইন্যান্স (বিআইআইএফ) কনফারেন্স হলে ‘ধর্মীয় উৎসব ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মাল্টিফেইথ নেইবার্স নেটওয়ার্কের (এমএফএনএন) সহযোগিতায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট (বিআইআইটি) এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিআইআইটির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এম আবদুল আজিজ। বক্তব্য উপস্থাপন করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম শায়খ মোহাম্মাদ মহিবুল্লাহিল বাকী। তিনি বলেন, ইসলাম শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন আর আমার জন্য আমার দীন।’ এ আয়াতই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মূল শিক্ষা দেয়। উৎসবকে রাজনৈতিক না করে সম্প্রীতির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করা উচিৎ।বাংলাদেশ ভ্রমণ

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব ড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, দুর্গোৎসব হোক বা ঈদ—আমাদের উৎসবগুলোতে সব ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে আমরা কতটা আন্তরিকভাবে একে অপরের সাথে জড়িয়ে আছি। এই ঐতিহ্য আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছেও পৌঁছে দিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডক্টর আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য এই যে, আমাদের দেশের বেশিরভাগ সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পেছনে ব্যক্তি স্বার্থ ও রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার খবর পাওয়া যায়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে হলে ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদেরকে সহনশীল বক্তব্য রাখতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এমন কথাবার্তা পরিহার করতে হবে সবাইকে।

বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ভদন্ত বোদ্ধানন্দ মহাথেরো বলেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান আমরা সবাই সবাই মানুষ। আমাদের সকলের প্রতি সেই সহমর্মিতা ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে পারলে বাংলাদেশে আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবো।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট দ্বীনবন্ধু রায় বলেন, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সম্প্রীতির বন্ধনকে রক্ষা করা। প্রত্যেক ধর্মের মূলকথাই হচ্ছে শান্তি ও সম্প্রীতি অথচ আমরা তা অনুসরণ করিনা। যতদিন আমরা অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবো না, ততোদিন আমরা সমাজে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে পারবো না।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. এম আবদুল আজিজ বলেন, বাংলাদেশের মাটি বরাবরই বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির মিলনের স্থান। আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে যেন কোনো ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। মুসলিমসহ সব ধর্মের মানুষ একে অপরের পাশে দাঁড়ালে সম্প্রীতির বন্ধন আরো দৃঢ় হবে। পাশাপাশি স্ব স্ব এলাকায় বিভিন্ন ধর্মের মানুষ যৌথভাবে সামাজিক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে উদ্যোগী হলে পরে সম্প্রীতি ও সহাবস্থান আরো সৃদৃঢ় হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।বাংলাদেশ ভ্রমণ

এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম, লেখক ও গবেষক এমদাদুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্রাহ্মন সংসদের জেনারেল সেক্রেটারি বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, ড. জাকির হোসেন সেলিম, সজীব কুন্ড তপু, অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার পাল।

 

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাহিদুর রহমান। সভায় বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

HN
আরও পড়ুন