ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বিনিয়োগ ঘাটতি পূরণ চ্যালেঞ্জ হলেও অপরিহার্য: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩০ পিএম

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি ) অর্জনে প্রতিবছর ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ ঘাটতি পূরণ করা কঠিন চ্যালেঞ্জ হলেও অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহনশীল বৈশ্বিক অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে আয়োজিত প্রথম দ্বিবার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এসডিজি) বাস্তবায়নের জন্য অর্থায়ন প্রতিশ্রুতি’ শীর্ষক অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, চতুর্থ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অর্থায়ন সম্মেলনে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো এখন বাস্তবে রূপ দেওয়ার সময় এসেছে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বুধবার রাতে এ তথ্য জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বর শোনা জরুরি। আমরা বিশ্বাস করি, দারিদ্র্য কারও স্বপ্নপূরণের অন্তরায় হতে পারে না। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও সম্পদে প্রবেশাধিকার ন্যায়বিচারের হাতিয়ার। যখন একজন নারী ব্যবসা শুরু করেন, তরুণেরা সৌরবিদ্যুৎ ও তথ্যপ্রযুক্তির সুযোগ পান, কিংবা বস্তির শিশুরা পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সুবিধাসহ স্কুলে যায়—তখন পরিবর্তন বাস্তব হয় এবং স্থায়ী রূপ নেয়।

তিনি ‘সেভিল প্রতিশ্রুতি’র কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি দেশীয় সম্পদ আহরণ, অবৈধ অর্থপ্রবাহ রোধ, উন্নয়ন ব্যাংককে ক্ষমতায়ন এবং প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য একটি নতুন কাঠামো প্রদান করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা এসডিজির জন্য অর্থায়ন জোরদারে পাঁচটি অগ্রাধিকার তুলে ধরেন- 

প্রথমত, দেশীয় সম্পদ ন্যায্যভাবে আহরণ ও আন্তর্জাতিক সহায়তা বৃদ্ধি করা। প্রগতিশীল ও স্বচ্ছ করব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে ন্যায্য কর দিতে হবে। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক কর সহযোগিতা কাঠামোর আলোচনায় এ বৈষম্যগুলো সমাধান করতে হবে।

একই সঙ্গে জাতিসংঘের বাজেটকাট বা উন্নয়ন সহায়তা হ্রাস বাংলাদেশসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত দেশের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। বিশেষ করে বাংলাদেশে ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় দেওয়া, জলবায়ু আঘাত ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে বৈশ্বিক সহায়তা আরও বাড়াতে হবে।

দ্বিতীয়ত, উদ্ভাবনী অর্থায়ন ও সামাজিক ব্যবসা কাজে লাগানো। ব্লেন্ডেড ফাইন্যান্স ও মুনাফা পুনর্বিনিয়োগকারী উদ্যোগ কর্মসংস্থান, অন্তর্ভুক্তি ও মর্যাদা সৃষ্টিতে এরই মধ্যে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।

তৃতীয়ত, বৈশ্বিক আর্থিক স্থাপনা ও ঋণ শাসন ব্যবস্থার সংস্কার। উন্নয়নশীল দেশগুলোর কণ্ঠ আরও জোরালো করতে হবে। ঋণ যেন কৃচ্ছ্রসাধন নয়, বরং স্থিতিস্থাপকতা ও উন্নয়নের হাতিয়ার হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

চতুর্থত, স্বচ্ছতা ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং অবৈধ অর্থপ্রবাহ রোধ করা। বিশেষত যুবসমাজকে জানতে দিতে হবে কিভাবে সম্পদ ব্যবহার হচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

পঞ্চমত, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য বিনিয়োগ বাড়ানো। যেমন- সহনশীল আবাসন, জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং প্রকৃতিনির্ভর সমাধান।

LH/MMS
আরও পড়ুন