সরকারের ৩০৯ কোটি টাকার ক্ষতি

শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা অনুমোদন

আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:১৪ পিএম

মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায় চুক্তিতে অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সরকারের শতকোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছয় সাবেক মন্ত্রী ও কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (১২ অক্টোবর) দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমস লিমিটেড (সিএনএস)-কে একক উৎসভিত্তিক দরপত্রে (Single Source Tender) এই দায়িত্ব প্রদান করা হয়। পূর্বের বৈধ টেন্ডার বাতিল করে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই চুক্তিটি সম্পাদন করা হয়।

চুক্তির আওতায়, সিএনএস-কে টাকার অঙ্কে নয় বরং আদায়কৃত টোলের ১৭.৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জে (ভ্যাট ও আয়কর ব্যতীত) কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। এতে প্রতিষ্ঠানটি মোট ৪৮৯ কোটি টাকার বেশি বিল গ্রহণ করে। অথচ ২০১০–২০১৫ মেয়াদে এমবিইএল-এটিটি যৌথ উদ্যোগে একই কাজ করতে খরচ হয়েছিল মাত্র ১৫ কোটি টাকার কিছু বেশি।

২০২২-২৫ মেয়াদে ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড একই ধরনের প্রযুক্তিতে তিন বছরের জন্য ৬৭ কোটি টাকায় চুক্তি পায়, যা পাঁচ বছরে রূপান্তর করলে প্রায় ১১২ কোটি টাকা হয়। ফলে সিএনএস লিমিটেডকে একক উৎসভিত্তিক চুক্তির মাধ্যমে দায়িত্ব দেওয়ায় সরকারের ৩০৯ কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

আবার ২০২২-২৫ মেয়াদে ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড একই ধরনের প্রযুক্তিতে তিন বছরের জন্য ৬৭ কোটি টাকায় চুক্তি পায়, যা পাঁচ বছর মেয়াদে আনুমানিক ১১২ কোটি টাকা হয়। এই অনিয়মের কারণে সরকারের আনুমানিক ৩০৯ কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযুক্তদের তালিকায় কারা আছেন:
সাবেক প্রধানমন্ত্রী: শেখ হাসিনা

সাবেক মন্ত্রী: আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক

সাবেক প্রতিমন্ত্রী: এম এ মান্নান

সরকারি কর্মকর্তারা: এম এ এন ছিদ্দিক (সচিব), মো. ফারুক জলিল (অতিরিক্ত সচিব), মোহাম্মদ শফিকুল করিম (উপ-সচিব), প্রকৌশলী মো. ফিরোজ ইকবাল, ইবনে আলম হাসান, মো. আফতাব হোসেন খান, মো. আব্দুস সালাম

সিএনএস লিমিটেডের প্রতিনিধিরা: ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনীর উজ জামান চৌধুরী, পরিচালক সেলিনা চৌধুরী ও ইকরাম ইকবাল

আইনি ধারা ও অভিযোগ:
দুদক জানিয়েছে, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও আত্মসাৎমূলক কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

MMS