ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া চূড়ান্ত

আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০৮ পিএম

দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যে প্রণীত জুলাই সনদের আলোকে পুলিশ সংস্কারের অংশ হিসেবে ‘পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ- ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রক্রিয়াটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদনের জন্য উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হবে।

সূত্রগুলোর মতে, অধ্যাদেশটি অনুমোদিত হলে এটি পুলিশের কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা, পেশাদারিত্ব ও জনবিশ্বাস প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে উপদেষ্টাদের একটি কমিটি পুলিশ কমিশনের কাঠামো, এখতিয়ার ও কার্যাবলি নির্ধারণ করে খসড়াটি প্রস্তুত করেছে।

পুলিশ সংস্কার ছিল চলতি বছরের জুলাই মাসে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত ‘জাতীয় সনদ’-এর অন্যতম প্রধান অঙ্গীকার।

খসড়া অধ্যাদেশে প্রস্তাব করা হয়েছে, একজন অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পুলিশ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কমিশনের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে থাকবেন- একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, একজন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা (গ্রেড-২ বা তার ঊর্ধ্বে), অন্তত অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (অ্যাডিশনাল আইজিপি) পদমর্যাদার একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা, পুলিশ একাডেমির একজন সাবেক অধ্যক্ষ, কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত কোনো আইন বা অপরাধতত্ত্ব বিষয়ের অধ্যাপক এবং কমপক্ষে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন মানবাধিকার কর্মী।

চেয়ারম্যানের পদমর্যাদা হবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতির সমান, আর সদস্যদের পদমর্যাদা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমান। প্রত্যেক সদস্য চার বছরের জন্য নিয়োগ পাবেন, তবে পুনঃনিয়োগের সুযোগ থাকবে না।

খসড়া অনুযায়ী, কমিশনের কোনো নির্দেশনা বা সুপারিশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তিন মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দিতে হবে। যদি বাস্তবায়নে কোনো জটিলতা দেখা দেয়, তবে কর্তৃপক্ষ একই সময়ের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করবে, যাতে কমিশন বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

কমিশন গঠনের জন্য সাত সদস্যের একটি নির্বাচন কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই কমিটিতে থাকবেন- প্রধান বিচারপতির মনোনীত একজন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, সরকার ও বিরোধী দলের প্রতিনিধি এবং অন্যান্য মনোনীত সদস্যরা।

নির্বাচন প্রক্রিয়া ৩০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে, এবং কমপক্ষে পাঁচ সদস্য উপস্থিত থাকলেই কোরাম পূর্ণ হবে। অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে- কমিশনের গঠন ও প্রশাসনিক কাঠামো, সদস্যদের নিয়োগ ও অপসারণ প্রক্রিয়া, পুলিশ শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা, অভিযোগ তদন্তের পদ্ধতি, পুলিশ সদস্যদের অভিযোগ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা এবং পুলিশ প্রধান নিয়োগের জন্য নীতিমালা-সংক্রান্ত বিস্তারিত বিধান।

DR/FJ
আরও পড়ুন