বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ২০২ ফ্লাইটটি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করছে। এর মধ্য দিয়ে তিনি দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশের মাটিতে পা দিলেন।
এর আগে বাংলাদেশের আকাশসীমায় প্রবেশ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, ‘দীর্ঘ ৬ হাজার ৩১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে!’
এর আগে গতকাল (বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে বিমানের বিজি-২০২ ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশে লন্ডন ছেড়েছে।
এদিকে সবকিছু ঠিক থাকলে দুপুর ১২টার দিকে তাকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
এর আগে বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল বলেন, আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, তারেক রহমানকে বহনকারী বিমানটি বর্তমানে ভারতের আকাশসীমা অতিক্রম করছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সিলেটে অবতরণ করবে। বিমান কর্তৃপক্ষ ফ্লাইটটি সময়মতো পরিচালনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা আসছেন। আমরা আশা করছি পুরো এক্সপ্রেসওয়ে জনতায় পূর্ণ হয়ে যাবে।
ডা. পাভেল জানান, সিলেট বিমানবন্দরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তারেক রহমানকে স্বাগত জানাবেন। এরপর তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে দলীয় চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেখবেন।
এদিকে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে সারা দেশের বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ, যা শেষ সময়ে আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
তারেক রহমানের দেশে ফেরার তারিখ চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকেই সড়ক, রেল ও নৌপথে ঢাকামুখী নেতাকর্মীদের ঢল নামতে শুরু করে। গতকালও (বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর) দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীদের ভিড় দেখা গেছে রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাটগুলোতে। সংবর্ধনায় অংশ নিতে দলের উদ্যোগে ১০টি রুটে বিশেষ ট্রেন বুকিং দেয়া হয়েছে।
নেতাকে বরণ করে নিতে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড মোড় থেকে পূর্বাচলমুখী সড়কের উত্তর অংশে দক্ষিণমুখী করে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুটের একটি বিশাল মঞ্চ। এছাড়া বিমানবন্দর থেকে ৩০০ ফিট এলাকা হয়ে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত পুরো পথে বসানো হয়েছে ৯০০টি মাইক, যাতে সংবর্ধনার বার্তা ও বক্তব্য সবার কাছে পৌঁছে দেয়া যায়।
বুধবার মধ্যরাতে নির্মাণাধীন মঞ্চ পরিদর্শন করেন তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ। এসময় তিনি আয়োজকদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে সারা দেশেই নান্দনিক ব্যানার-ফেস্টুনে সাজানো হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো। বিশেষ করে পূর্বাচল ও ৩০০ ফিট এলাকায় নেতাকর্মীদের পদচারণায় উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছে। হাতে হাতে শোভা পাচ্ছে জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি, বিক্রি হচ্ছে দলীয় পতাকা।
নেতাকে বরণের মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় উন্মুখ নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, এই সংবর্ধনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে।
