ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

একুশের প্রেরণায় ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি: রিজভী

‘একুশে ফেব্রুয়ারি যুগ যুগ ধরে আমাদেরকে সাহস যোগাবে এবং লড়াই করতে উদ্ধুব্ধ করবে।’

আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম

একুশের প্রেরণায় আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘একুশের প্রেরণায় আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি। অনেক নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে, ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। তাদের রক্তাক্ত পথ পেরিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলনে ছাত্র-জনতা যে বিপ্লব করেছে, তার মধ্য দিয়ে সেই ভয়ংকর উৎপীড়ক এবং রক্ত পিপাসু স্বৈরাচার, ভয়ংকর দুর্নীতিবাজ সরকার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।’

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা অম্লান, এই চেতনা কোনদিন ম্লান হবে না। যদি আবারো দেশে কোনো ফ্যাসিজমের উত্থান ঘটে, কোনো ধরনের ডিক্টেটরের উত্থান ঘটে একুশে ফেব্রুয়ারি চেতনা বুকে ধারণ করে এদেশের জনগণ আবারো রাজপথে লড়াইয়ে নামতে উদ্ধুদ্ধ হবেন।’

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘আমরা মনে করি যে, ৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারি যুগ যুগ ধরে আমাদের কাছে এমন একটি বৈপ্লবিক আদর্শ যা আমাদেরকে উদ্ধুদ্ধ করে। যেটাকে কখনোই ধবংস করা যায় না, কখনোই ম্লান করা যায় না। একুশে ফেব্রুয়ারি যুগ যুগ ধরে আমাদেরকে সাহস যোগাবে এবং লড়াই করতে উদ্ধুব্ধ করবে।’

একুশ মানে অধিকারের সংগ্রাম উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘একুশ ছিল জাতীয় স্বাধীনতার প্রথম সোপান। এই ভাষা আন্দোলনের সোপান পেরিয়ে আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে গেছি স্বাধীনতা যুদ্ধের দিকে। আমরা অর্জন লাভ করেছি মহান স্বাধীনতা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যখনই স্বৈরাচারের কবলে পড়েছি, যখন দেশে গণতন্ত্রহারা মানুষ বন্দিশালার মধ্যে বাস করেছে তখন ৫২-র একুশ আমাদের উদ্ধুব্ধ করেছে। প্রেরণা জাগরিত করেছে কীভাবে আমরা এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করব।’

 

এই সরকারের দায়িত্ব অতি দ্রুত দেশে একটি নির্বাচন দেওয়া উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। এর সঙ্গে দেশের সংস্কার করাটাও জরুরি। তবে প্রয়োজনীয় সংস্কার নির্বাচিত পার্লামেন্টে এসে সহজেই করতে পারবে। সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনের সময় প্রলম্বিত করা যাবে না।’

‘সংসদ নির্বাচনই আগে দরকার’ উল্লেখ করে রিজভী বলেন, আগে স্থানীয় সরকার নাকি পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এই বির্তকে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না, কারণ জাতীয় নির্বাচন এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি। জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিলে, তারাই তাদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বেছে নেবে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে মহিউদ্দিন চৌধুরী জিতেছে। সিলেট সিটি নির্বাচনে বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান জিতেছে। ঢাকা সিটি করপোরেশনে মোহাম্মদ হানিফ জিতেছে। এর কারণ হলো বিএনপির সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করায় বিরোধীরা জিতেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সেটা হয়নি।’

খালেদা-তারেক নিয়ে ফেসবুকে দেওয়া তথ্য সঠিক নয়- জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘আমাদের কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখছেন যে, আগামী নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি হবেন। তবে এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, এমন তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই। এটা যার যার ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে। কিন্তু এটা আমাদের দল বিএনপির অবস্থান নয়।’

এর আগে ভোর সাড়ে ছয়টায় নিউ মার্কেটের কাছে বলাকা সিনেমা হলের সামনে থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিশাল প্রভাবফেরি আজীমপুর কবরাস্থানে যায় রিজভীর নেতৃত্বে। সেখানে ভাষা শহীদদের কবরে পুস্পস্তবক অর্পন এবং ফাতেহা পাঠ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসে বিএনপির প্রভাতফেরি।

এ সময় নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করে। রিজভীর নেতৃত্বে শহীদ মিনারের বেদীতে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে পুস্পস্তবক অর্পন করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

এ সময় দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম,যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরাফত আলী সপু, আমিনুল হক, ইশরাক হোসেন, মোনায়েম মুন্না, নুরুল ইসলাম নয়নসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

NC
আরও পড়ুন