ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

‘জাতীয় অনৈক্য’ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে ঐকমত্য কমিশন: সালাহউদ্দিন

আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৫৩ পিএম

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আসলে ঐকমত্য নয়, বরং ‘জাতীয় অনৈক্য’ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কমিশন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত যে সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে, সেখানে স্বাক্ষরিত সনদের বাইরের অনেক বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। এতে কমিশনের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।’

তিনি জানান, জুলাই জাতীয় সনদে মোট ৮৪টি দফা রয়েছে, যেখানে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নোট অব ডিসেন্ট বা ভিন্নমত স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত ছিল। বলা হয়েছিল, দলগুলো চাইলে এসব ভিন্নমত নির্বাচনি ইশতেহারে তুলে ধরে জনম্যান্ডেট পেলে বাস্তবায়ন করতে পারবে। কিন্তু কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশে এই নোট অব ডিসেন্টের কোনো উল্লেখই রাখা হয়নি।

সালাহউদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেন, ‘যে সনদে রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করেছে, তার বাইরের অনেক পরামর্শ সংযোজন করা হয়েছে। এতে ঐকমত্য নয়, বরং মতবিরোধই সৃষ্টি হবে। কমিশন ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ নামে নতুন একটি ধারণা যোগ করেছে, যা আলোচনায় ছিল না এবং এ বিষয়ে কোনো ঐকমত্য হয়নি।’

গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব নিয়েও আপত্তি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কমিশন বলেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের দিন গণভোট হতে পারে। এটা কখনোই আলোচনায় আসেনি। এখন এসব নতুন প্রস্তাব যুক্ত করে ঐকমত্যের বদলে বিভাজন তৈরি করা হচ্ছে।’

জুলাই সনদে থাকা একটি ধারার সমালোচনা করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সেখানে বলা হয়েছে, ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার পরিষদ কোনো বিল পাস না করলে তা অটোমেটিক পাস হয়ে যাবে। এটা হাস্যকর বিষয়। পরীক্ষায় অটোপাসের মতো বিষয় সংবিধানে থাকতে পারে না। কমিশন সম্ভবত দায়মুক্তি পাওয়ার জন্যই এমন সুপারিশ দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করি। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না এটি বলার সময় এখনও আসেনি। তবে আইনানুগ ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।’

আরপিও সংশোধনের পর নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতীক ব্যবহারের বিধান নিয়েও মত দেন বিএনপির এই নেতা।তিনি বলেন, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল জোটভুক্ত হলে নিজস্ব প্রতীকেই নির্বাচন করতে বাধ্য থাকবে। কিন্তু বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে আগের বিধান বহাল থাকা উচিত অর্থাৎ দলটি চাইলে জোটের অন্য কোনো দলের প্রতীকেও নির্বাচন করতে পারবে।’

সবশেষে তিনি বলেন, ‘আমরা কমিশনের কাজ শেষ করায় কৃতজ্ঞতা জানাই। কিন্তু যেভাবে নতুন বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে, তাতে জাতীয় ঐকমত্য নয়, বরং বিভক্তির ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পুনরায় আলোচনার প্রয়োজন হতে পারে।’

DR/FJ
আরও পড়ুন