কোরবানি শব্দের অর্থ হলো নৈকট্য, ত্যাগ ও তিতিক্ষা। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য যেকোনো ত্যাগই হলো কোরবানি। পরিভাষায় কোরবানি হলো জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সূর্যোদয় থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগপর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে নির্দিষ্ট জন্তু জবাই করা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে নারী কি কোরবানির পশু জবাই করতে পারবেন, ইসলাম কী বলে?
ইসলামের শরিয়ত অনুযায়ী, নারী তার নিজের কোরবানির পশু জবাই করতে বাধা নেই। তবে নারীরা দুর্বলচিত্তের কারণে অনেক সময় বিষয়টি নিতে পারেন না। তাই এই দায়িত্ব তাদের দেওয়া হয়নি। কিন্তু কোনো নারী যদি পশু জবাই করতে চান, সেক্ষেত্রে এটি জায়েজ হবে।
কথা হচ্ছে যুগ যুগ ধরে পুরুষরাই কোরবানির পশু জবাই করে আসছেন। কিন্তু কোথাও যদি পুরুষ না পাওয়া যায় তাহলে নারী পশু জবাই করতে পারবেন,এটি বৈধ। এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।
বর্ণিত হাদিসে হযরত কাব ইবনু মালিক (র.) বলেছেন, তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে তার কতগুলো ছাগল বা ভেড়া ছিল, যেগুলো সাল নামক স্থানে চরে বেড়াতো। একদিন আমাদের এক দাসি দেখল যে আমাদের ছাগল বা ভেড়ার মধ্যে একটি ছাগল মারা যাচ্ছে। তখন সে একটি পাথর ভেঙে তা দিয়ে ছাগলটাকে জবাই করে দিলো।
হযরত কাব তাদেরকে বললেন, তোমরা এটা খেয়ো না, যে পর্যন্ত না আমি নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করে আসি অথবা কাউকে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে জিজ্ঞেস করতে পাঠাই। তিনি নিজেই নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন অথবা কাউকে পাঠিয়েছিলেন। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা খাওয়ার হুকুম দিয়েছিলেন। (বুখারি: ২৩০৪)
এ হাদিসের বর্ণনা থেকে নারীরা কোরবানির পশু জবার বিষয়ে জানা গেলো। তাছাড়া কোরবানির পশু মুসলমান নারী ও পুরুষ সবাই জবাই করতে পারেন। নিজের কোরবানির পশু নিজে জবাই করা উত্তম। নিজে জবাই করতে না পারলে যেকোনো কাউকে দিয়ে জবাই করাতে পারেন। জবাইয়ের সময় নিজে উপস্থিত থাকতে পারলে ভালো।
