ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

-

বিয়ের জন্য পাত্রী দেখার নিয়ম

আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৩৬ এএম

বিয়ে একটি ইবাদত। মানসিক প্রশান্তি ও স্বস্তির বন্ধন। প্রতিটি মানুষ রঙিন এই বন্ধনের স্বপ্ন দেখে । এই স্বপ্ন পূরণের পূর্বে সামাজিক ও পারিবারিক বিভিন্ন কিছুর আয়োজন করা হয়। 

বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে আংটি বদল বা আংটি পরানো হয়। যাকে এনগেজমেন্ট বলে। ছেলে-মেয়ের পরিবার বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে আনন্দ অনুষ্ঠান করে। যাকে বলে বাগদান অনুষ্ঠান। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবেও তরুণ-তরুণীরা পরস্পরে বিয়ের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। 

বিয়ের প্রতিশ্রুতি বা এনগেজমেন্ট হলে পাত্রী দেখা যাবে।

নবীজি বলেন, যখন তোমাদের কেউ কোনো নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, যদি সে তার মধ্যে এমন কিছু দেখে নিতে পারে যা তাকে বিয়েতে উৎসাহিত করে, তবে তা করতে দোষ নেই। (সুনান আবু দাউদ: ২০৪২)

ফতোয়ার কিতাবে বলা হয়েছে, ছেলে পক্ষের বিয়ের নিয়ত থাকলে এবং মেয়ে পক্ষ প্রস্তাব গ্রহণ করবে বলে মনে হলে পাত্রী দেখা যাবে। 

"لا يجوز النظر إلى الأجنبية بشهوة، ويجوز للخاطب النظر إلى من يريد نكاحها إن غلب على ظنه الإجابة.

অর্থাৎ কোনো পরনারীর নারীর দিকে কামনা সহকারে তাকানো জায়েজ নয়। তবে যদি বিয়ের উদ্দেশ্য থাকে এবং প্রস্তাব গ্রহণ করবে বলে মনে হলে মেয়ে দেখা যাবে। (আদ্দুরুল মুখতার ২/২৮৫)

মেয়ে দেখার সময় অভিভাবক উপস্থিত থাকতে হবে। নির্জনে বা একাকী দেখা যাবে না।

বিয়ের পূর্ণ ইচ্ছা থাকলে পাত্রীর মুখ ও হাত দেখা যায়। তবে লোলুপ মানসিকতায়  নয় বরং তার সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্যের গঠন বোঝার জন্য তাকাবে। (হেদায়া ১/২১০, ফতোয়া আলমগিরি, ১/২৮৪)

পর্দা, শালীনতা রক্ষা করে পাত্রীর সঙ্গে দেনমোহর, বাসস্থান অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ ও প্রয়োজনীয় বিষয়ে কথা বলা যাবে। কিন্তু এই কথা বলা কোমল স্বর বা প্রলুব্ধকর ভঙ্গিতে না হতে হবে। 

আল্লাহ তাআলা বলেন-নারীগণ নরম স্বরে কথা বলো না। কারণ যার অন্তরে রোগ আছে সে যেন লোভে না পড়ে। সূরা আহযাব: আয়াত ৩২

পাত্রী দেখতে গিয়ে ছেলে তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। ধরতেও পারবে না। নবীজী বলেন, কারও মাথায় লোহার সূই ফোটানোকে সহজ মনে করি ওই নারীকে স্পর্শ করার চাইতে যে তার জন্য বৈধ নয়। (আল মুজামূল কাবীর লিত তবরানি:২০/২১২) 

বিয়ে কোন একতরফা বিষয় নয়। বরং দু’পক্ষের সম্মতি অপরিহার্য। তাই শুধু ছেলে-মেয়েকে দেখবেনা। বরং মেয়েরও অধিকার আছে ছেলেকে দেখার। 

হযরত খুনাইসা বিনতে খিজাম আল-আনসারিয়া রা. থেকে বর্ণিত। তার পিতা এমন ব্যক্তির সঙ্গে তাকে বিয়ে দেন যাকে তিনি পছন্দ করেন নি। ফলে তিনি নবীজীর এর কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ করলেন। তখন নবীজি সে  বিয়ে বাতিল করে দিলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫১৩৮)  

বিয়ের প্রতিশ্রুতি বা এনগেজমেন্ট হলেই আবেগের ঝড়ে পরাজিত হওয়া যাবে না। বরং পর্দা, শালীনতা ও শরীয়তের সীমার ভিতর থেকে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ করতে হবে । তাহলেই আল্লাহর রহমত এবং ঐশী আলোয় আলোকিত হবে নতুন জীবন। গড়ে উঠবে  একটি পবিত্র, সুন্দর ও কল্যাণকর দাম্পত্য জীবন। 

HN
আরও পড়ুন