ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

জুমার দিন সুগন্ধি ব্যবহার নিয়ে যা বলেছেন নবীজি

আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৩৯ এএম

ইসলাম ধর্মে জুমার দিনকে বিশেষভাবে মর্যাদাপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে শুধু ইবাদতের জন্য নয়, বরং আত্মশুদ্ধি, পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত। জুমার দিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সুন্নতের একটি হলো সুগন্ধি ব্যবহার, যা শুধুমাত্র নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করাই নয়, বরং ইবাদতের মান উন্নয়নের দিকেও ইঙ্গিত করে।

সহিহ বুখারির একটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘জুমার দিন তোমরা মিসওয়াক করবে এবং যার সুগন্ধি আছে, সে তা ব্যবহার করবে।’ (সহিহ বুখারি: ৮৮০)

এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, জুমার দিনে সুগন্ধি ব্যবহার করা শুধু পছন্দনীয় নয়, বরং তা ইবাদতের প্রস্তুতির একটি অংশ। এতে ব্যক্তি যেমন নিজেকে প্রস্তুত করে, তেমনি তার উপস্থিতি অন্যদের জন্যও স্বস্তিদায়ক হয়।

রাসুলুল্লাহ (স.) মসজিদকে পরিচ্ছন্ন ও সুবাসিত রাখার গুরুত্ব আরোপ করেছেন। হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা তোমাদের মসজিদগুলো পরিষ্কার রাখো এবং তা সুগন্ধি দাও।’ (ইবনে মাজাহ: ৭৫৯)

দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) এর আমলেও জুমার দিন মসজিদে সুগন্ধি ব্যবহারের বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হতো।

সুগন্ধির তাৎপর্য ও উপকারিতা

  • ইবাদতের মানসিক প্রস্তুতি: সুগন্ধি শরীর ও মনকে সতেজ করে তোলে, যা মনোযোগীভাবে নামাজ আদায়ে সহায়ক।
  • পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবোধ: ইসলাম পরিচ্ছন্নতার ধর্ম, আর সুগন্ধি ব্যবহার তারই একটি চমৎকার বহিঃপ্রকাশ।
  • জুমার দিনের মর্যাদা রক্ষা: সুগন্ধির মাধ্যমে ব্যক্তি জুমার গুরুত্বকে সম্মান জানান।
  • ইবাদতের পরিবেশ উন্নয়ন: মুসল্লিরা যখন সবাই সুগন্ধি ব্যবহার করে, তখন মসজিদে থাকে এক প্রশান্তিময় পরিবেশ, যা ইবাদতে মনোযোগ বৃদ্ধি করে।

বিশেষজ্ঞ আলেমরা বলছেন, জুমার দিনে সুগন্ধি ব্যবহারে রয়েছে একাধারে ধর্মীয় নির্দেশনা, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা এবং সামাজিক সৌহার্দ্য। এটি ইসলামের সৌন্দর্যময় সংস্কৃতির একটি উজ্জ্বল দিক, যা শুধু অতীত নয়, বর্তমানেও প্রাসঙ্গিক ও প্রয়োজনীয়।

ইসলামের এই সুন্দর নির্দেশনা ব্যক্তি জীবনে বাস্তবায়নের পাশাপাশি সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া জরুরি। জুমার দিনে সুগন্ধি ব্যবহার শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি মুসলিম জীবনের শুদ্ধতা, সৌন্দর্য ও রুচিশীলতার প্রতীক।

স্মরণে রাখার মতো কথা রাসুলুল্লাহ (স.) সুগন্ধি পছন্দ করতেন এবং তিনি বলেছেন, ‘তিনটি জিনিস আমার জন্য প্রিয় করা হয়েছে নারী, সুগন্ধি, এবং সালাত, যা আমার চোখের শীতলতা।’ (নাসাঈ: ৩৯৩৯)

তাই, জুমার দিনকে ঘিরে নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে সুগন্ধি ব্যবহার করা হোক আমাদের নিয়মিত আমল ও সচেতনতা।

NB/AHA
আরও পড়ুন