ঢাকা
মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাঁচ ফজিলত

আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:২৯ পিএম

দৈনন্দিন আমলের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য অবারিত ক্ষমার সুযোগ দিয়েছেন। যেমন অজু থেকে শুরু করে নামাজ শেষ পর্যন্ত এবং দৈনন্দিন জিকির ও দোয়া। সবকিছুতেই পাপ মোচনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

ক্ষমা লাভের অবারিত সুযোগ থাকার পরও আমরা অনেকেই সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারি না। এর বড় কারণ হলো অবহেলা ও গাফিলতি। নামাজ ও বিভিন্ন আমলে আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমার ঘোষণা পাওয়ার পরও ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার মোহ মানুষকে অনন্তকালের জীবনের কথা ভুলিয়ে দেয়। পাপের ভয় ও ক্ষমা লাভের আগ্রহ না থাকায় সহজ সুযোগও হাতছাড়া হয়ে যায়।

অথচ ইসলাম মানুষের ক্ষমা লাভের পথকে সহজ করে দিয়েছে। প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আমাদের জন্য পাঁচবার ক্ষমার সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে আসে।

অজুর পানির ফোঁটার সঙ্গে ঝরে যায় গুনাহ

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেছেন, কোন মুসলিম কিংবা মুমিন বান্দা অজুর সময় যখন মুখমণ্ডল ধুয়ে ফেলে তখন তার চোখ দিয়ে অর্জিত গুনাহ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যায় এবং যখন সে দুই হাত ধৌত করে তখন তার দু’হাতের স্পর্শের মাধ্যমে সব গুনাহ পানির শেষ বিন্দুর সাথে ঝরে যায়। 

অতঃপর যখন সে দুই পা ধৌত করে, তখন তার দু’পা দিয়ে হাটার মাধ্যমে অর্জিত সব গুনাহ পানির শেষ বিন্দুর সাথে ঝরে যায়, এমনকি সে যাবতীয় গুনাহ থেকে মুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়। (সহিহ মুসলিম)

মসজিদে যাওয়ার সময় প্রত্যেক কদমে সওয়াব

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, যে কেউ সুন্দরভাবে পবিত্রতা অর্জন করে মসজিদগামী হয় আল্লাহ তায়ালা তাকে প্রতি কদমের বদৌলতে একটি করে পুণ্য দিবেন ও তার একটি করে মর্যাদা উন্নীত করবেন এবং একটি করে তার গুনাহ মুছে দিবেন। (সহিহ মুসলিম)

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে গুনাহ মাফের নিশ্চয়তা

হজরত আবু উসমান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সালমান ফারসী (রা.)-এর সঙ্গে একটি গাছের নিচে ছিলাম। তিনি গাছের একটি শুকনো ডাল নিয়ে ঝাড়া দিলেন, এর কারণে গাছের পাতাগুলো ঝরে পড়লো। তারপর বললেন, হে আবু উসমান! আমি কেন এমন করলাম, জানতে চাইবেন না? আমি বললাম, কেন এমন করলেন?

তিনি বললেন, আমি একবার রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে একটি গাছের নিচে ছিলাম, তখন তিনি সে গাছ থেকে একটি শুকনো ডাল নিলেন। তারপর তা ঝাড়া দিলেন, এতে পাতাগুলো পড়ে গেল। তখন বললেন, হে সালমান! কেন এমন করলাম জানতে চাইবে না? আমি বললাম, কেন এমন করলেন? উত্তরে রাসুল (সা.) বললেন, একজন মুসলমান যখন ভালোভাবে অজু করে এবং নামাজ আদায় করে তখন তার গুনাহগুলো এভাবেই ঝরে যায় যেমন এ পাতাগুলো ঝরে পড়লো। (মুসনাদে আহমাদ)

ফরজের পরের জিকিরে সীমাহীন পুরস্কার

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ, ৩৩ বার আল্লাহু আকবার আর ৯৯ বার হওয়ার পর শততম পূর্ণ করতে বলবে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’, 

তার গুনাহগুলো সাগরের ফেনারাশির মতো অসংখ্য হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (সহিহ মুসলিম)

অজুর পর দুই রাকাত নামাজ অতীতের সব গুনাহ মাফ করে

ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমান (রা.) একদিন অজুর পানি চাইলেন। অজু শুরু করে তিনবার সুন্দর করে দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত ধুলেন। তারপর তিন বার কুলি করলেন। নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলেন। এরপর তিন বার চেহারা ধুলেন। দুই হাতের কনুই পর্যন্ত ভালোভাবে তিনবার ধুলেন। তারপর মাথা মাসেহ করলেন এবং টাখনু পর্যন্ত পা তিনবার ধৌত করলেন। এরপর বললেন, রাসুল (সা.) বলেছেন-

‘যে ব্যক্তি এভাবে সুন্দর করে অজু করবে, তারপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে, যাতে দুনিয়ার কোনো খেয়াল করবে না, তার পেছনের সব সগিরা গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি)

SN
আরও পড়ুন