যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ভবিষ্যৎ নিয়ে দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তা কাটতে যাচ্ছে। মার্কিন বিনিয়োগকারীদের একটি জোটের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কার্যক্রম আলাদা করার (স্পিন-অফ) লক্ষ্যে একটি চুক্তিতে সই করেছে জনপ্রিয় এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি। টিকটকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শো চিউ কর্মীদের কাছে পাঠানো এক স্মারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্মারকে শো চিউ জানান, চুক্তিটি এখনো পুরোপুরি চূড়ান্ত না হলেও এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পথ অনেকটাই সুগম হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি নতুন যৌথ উদ্যোগ গঠনের লক্ষ্যে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এর ফলে ১৭ কোটির বেশি মার্কিন ব্যবহারকারী টিকটকের মাধ্যমে সৃজনশীলতা ও সম্ভাবনার একটি বৈশ্বিক কমিউনিটির অংশ হয়ে থাকতে পারবেন।’ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি সিএনএনকে স্মারকটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের কার্যক্রম পরিচালিত হবে একটি নতুন যৌথ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। এতে ৫০ শতাংশ মালিকানা থাকবে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের একটি কনসোর্টিয়ামের হাতে। এই কনসোর্টিয়ামে রয়েছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওরাকল, প্রাইভেট ইকুইটি ফার্ম সিলভার লেক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সমর্থিত বিনিয়োগ সংস্থা এমজিএক্স।
এছাড়া বাইটড্যান্সের বিদ্যমান কিছু বিনিয়োগকারীর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে থাকবে প্রায় ৩০ শতাংশ শেয়ার, আর মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স নিজের কাছে রাখবে ১৯ দশমিক ৯ শতাংশ মালিকানা। শো চিউ জানান, চুক্তি চূড়ান্ত করতে এখনো কিছু আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো আগামী ২২ জানুয়ারি ২০২৬ সালের মধ্যে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ করছে। তিনি আরও জানান, চুক্তির শর্তে বাইটড্যান্স ও টিকটক উভয়ই সম্মতি দিয়েছে।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কার্যক্রম মার্কিন বিনিয়োগকারীদের কাছে হস্তান্তরের বিষয়ে চীনের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো হয়েছে। সে সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যেখানে এই চুক্তিকে ‘যোগ্য বিভাজন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয় এবং নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের সময়সীমা ১২০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনের আওতায় বাইটড্যান্সকে টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৮০ শতাংশ সম্পদ চীনবহির্ভূত বিনিয়োগকারীদের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। নতুন ব্যবস্থার অধীনে মার্কিন ব্যবহারকারীদের তথ্যের ভিত্তিতে টিকটকের অ্যালগরিদম নতুন করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহারকারীদের তথ্য সংরক্ষণের দায়িত্ব থাকবে ওরাকলের ওপর। একই সঙ্গে কনটেন্ট পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের কাজও করবে নতুন এই যৌথ প্রতিষ্ঠান।
তবে শো চিউয়ের স্মারক অনুযায়ী, বৈশ্বিক টিকটক প্ল্যাটফর্ম যেটি এখনো বাইটড্যান্সের নিয়ন্ত্রণে থাকবে সেখান থেকে ই-কমার্স, বিজ্ঞাপন ও বিপণন কার্যক্রম পরিচালিত হতে পারে। এই চুক্তি কার্যকর করতে হলে চীনা সরকারের অনুমোদনও প্রয়োজন হবে।
এ বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এই চুক্তির বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছেন। তবে বেইজিং এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদনের কথা জানায়নি। শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কুও জিয়াকুন বলেন, ‘এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য নেওয়াই যথাযথ হবে। টিকটক ইস্যুতে চীনের অবস্থান স্পষ্ট ও অপরিবর্তিত।’
ওপেনএআইয়ে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ ডিজনির
জেনে নিন বিশ্বে সর্বাধিক ব্যবহৃত পাসওয়ার্ডগুলো